রাজ্য জুড়ে যখন বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজ নিয়ে বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-দের মধ্যে নানা রকমের সমস্যা, আতঙ্ক এবং কাজের চাপে মানসিক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তখন নির্ধারিত সময়ের আগে দ্রুত কাজ শেষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নদিয়ার হাঁসখালির বিএলও ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডল।
হাঁসখালি ব্লকের বড়চুপড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালযের শিক্ষক ওয়াহিদ মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে তাঁর বুথের অন্তর্গত ৮০৬ জন ভোটারের ফর্ম পূরণ এবং তা ‘ডিজিটাইজ়েশন’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে নজির তৈরি করলেন। গত ৪ নভেম্বর কাজ শুরু হওয়ার পর নির্ধারিত ২১ নভেম্বরের আগেই তিনি সমস্ত কাজ শেষ করেন। তাঁর এই কৃতিত্বের জন্য হাঁসখালির বিডিও তাঁকে সংবর্ধিত করেন।
দ্রুত কাজ শেষ করার কৌশল সম্পর্কে ওয়াহিদ জানান, তিনি কাজ ফেলে রাখতেন না। ৪ তারিখ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে তিনি সমস্ত ফর্ম বিলির কাজ শেষ করেন। এর পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম পূরণে সহায়তা করেন এবং ফর্ম সংগ্রহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিজিটাইজ়েশনের কাজ সেরে ফেলেন। তিনি স্বীকার করেন যে, অ্যাপে সমস্যা চলছে। তিনি এ-ও জানান, যে সময়ে অ্যাপ সচল থাকত, সেই সময়েই তিনি তাঁর কাজ এগিয়ে রাখতেন। ওয়াহিদ মনে করেন, এই ধরনের সমস্যাকে মেনে নিয়ে নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেলে দ্রুত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। অন্যদের মানসিক চাপ নিয়ে কাজ করার প্রসঙ্গে ওয়াহিদ জানান, তিনি নিজে কোনও চাপ নেননি। বরং নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া ট্রেনিং অনুযায়ী নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।
ওয়াহিদের এই দ্রুত কাজ শেষ করার নজিরকে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন হাঁসখালির বিডিও সায়ন্তন ভট্টাচার্য। বিডিও অফিসে ওয়াহিদকে সংবর্ধনা দেওয়ার পর তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি এই কাজের জন্য অনেকেই মানসিক চাপে ভুগছেন। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডলের মতো এক জন বিএলও মাত্র ১৭ দিনে তাঁর বুথের এত বড় কাজ শেষ করে দেখিয়ে দিলেন। তাঁর এই নিষ্ঠা ও সময়ানুবর্তিতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য এবং অন্য বিএলও-দের কাছে এক শিক্ষণীয় উদাহরণ। তাঁর এই কৃতিত্ব অন্যদেরও অনুপ্রাণীত করবে বলে আমরা আশা করি।”