—ফাইল ছবি
লকডাউনের আওতা থেকে ছাড় পেয়েছে কৃষি। তাতে মুখে হাসি ফুটেছে চাষি, দিনমজুরের।
লকডাউন শুরু হতে কাজ হারিয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিলেন তাঁদের অনেকে। ক্রমে ফাঁকা হয়ে এসেছিল চালের টিন, আনাজের ঝুড়ি। জমানো টাকা ফুরিয়ে আসায় অনেকে সংসারে চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। চাষকে ছাড় দেওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি অনেক দিনমজুরও চাষের কাজ পাচ্ছেন। তাতেউনুনে হাঁড়ি চড়ছে দিন আনি দিন খাই-র সংসারে। গতি এসেছে চাষের কাজেও।
চাষি ও কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৮৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যাঁরা আগে চাষ করেছেন তাঁদের জমিতে পাটের চারা ৪-৫ ইঞ্চি হয়ে গিয়েছে। সেই সব জমিতে নিড়ানির কাজ শুরু হয়েছে। তা করতে গিয়ে দিনমজুরেরা কাজ পাচ্ছেন। পাশাপাশি প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়েছে। পরিচর্যা ও আনাজ তুলতে মালিক সঙ্গে দু'এক জন দিনমজুর নেন। যা এই আকালের দিনে ভরসা জোগাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন গ্রামাঞ্চলে কাজের সুযোগ দুটো ক্ষেত্রে। একশো দিনের কাজ পাশাপাশি চাষের জমিতে দিনমজুরি। পারস্পরিক দূরত্ব রক্ষা করতে একশো দিনের কাজে প্রশাসন বড় কোনও প্রকল্পে কাজ শুরু করতে চাইছে না। তাই উভয় ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ কম। তবে যেটুকু সুযোগ রয়েছে সেটিকে কম হিসেবে দেখছেন না জেলার কৃষি কর্তারা। পটলের ফুল ছোঁয়া থেকে শুরু করে সার দেওয়া, পাটের জমিতে নিড়েন দেওয়ার মতো কাজে লোক প্রয়োজন।
মানিকনগরের বাসিন্দা পাটচাষি সন্তোষ মণ্ডল বলছেন, “পাট গাছ বড় হয়ে গিয়েছে। একার পক্ষে জমিতে নিড়েন দেওয়া সম্ভব নয়। দিনমজুর লাগাতে হয়েছে।” আনাজ চাষি উত্তম মণ্ডল বলছেন, “পটলের ফুল ছোঁয়ানো একার পক্ষে খুব কঠিন। এক জনকে সঙ্গে নিয়ে ফুল ছোঁয়ানোর পাশাপাশি পটলও তুলছি।”
দিনমজুরের কাজ করেন রামনগরের বাসিন্দা আনার শেখ। তিনি বলেন, “লকডাউনের পর থেকে কাজ বন্ধ ছিল। চেয়েচিন্তে সংসার চলছিল। মাঠের কাজে ডাক পড়ায় বেঁচেছি।” তাঁর কথায়, “যদি দু'এক দিন অন্তর কাজ পাই, পেটের ভাত জোগাড় করতে পারব।” জেলার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “লকডাউনের জেরে জেলায় চাষে কোনও সমস্যা হয়নি। চাষে ছাড় মেলায় অনেক মানুষ কাজ পাচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy