Advertisement
০২ মে ২০২৪
Migrant Workers West Bengal Lockdown

কেরল থেকে প্রত্যাবর্তন পরিযায়ীদের

শেষ পর্যন্ত শ্রমিকেরা ঘরে ফিরতে পারায় পরিবারের লোক খুশি, স্বস্তিতে প্রশাসন।

বুধবার বহরমপুর স্টেশনে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী

বুধবার বহরমপুর স্টেশনে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২০ ০৬:৩৮
Share: Save:

দু’দিন আগেই অজমের থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। বুধবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন কেরল ফেরত ১১২৩ শ্রমিক। যাত্রীদের নিয়ে বিশেষ ট্রেনটি বহরমপুর পৌঁছয় বুধবার রাতে।। যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার (১০৪৫ জন)। তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পরে প্রশাসন সরকারি বাসে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছে।

কেরল ফেরত ওই ট্রেনে রয়েছেন ডোমকলের রঘুনাথপুরের যুবক আব্বাস আলি। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন আটকে থাকার পরে বাড়ি ফিরতে পেরে ভাল লাগছে। তবে গাঁটের টাকা খরচ করে টিকিট কাটতে হল! ৯১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাড়ি ফিরছি।’’ ওই গ্রামেরই রাজেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘টিকিট না কাটলে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না। সাফ জানিয়ে দিয়েছিল। অত টাকা ছিল না। অন্যের কাছ থেকে ধার করে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছি। এখন পকেটে খাওয়ার পয়সাটুকুও নেই।’’ জলঙ্গির ফরিদপুরের মোমিনুল ইসলাম কিংবা ইসলামপুরের দিঘলকান্দির জালালউদ্দিন শেখ ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, ‘‘লকডাউনে কাজ হারিয়ে বসে ছিলাম। আমাদের হাত শূন্য। এই অবস্থায় গাঁটের টাকা খরচ করে ক’জন টিকিট কাটতে পারে!’’

তবু শেষ পর্যন্ত তাঁরা ঘরে ফিরতে পারায় পরিবারের লোক খুশি, স্বস্তিতে প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘শারীরিক পরীক্ষা শেষে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্য জেলার যাত্রীদেরও সেই জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে কেরলের এর্নাকুলাম থেকে বহরমপুরের উদ্দেশে রওনা দেওয়া ওই বিশেষ ট্রেনে মুর্শিদাবাদের ১০৪৫জন, নদিয়ার ৬১জন, বীরভূমের একজন, হুগলির একজন, হাওড়া ৩ জন, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের একজন, কলকাতার এক জন, উত্তর ২৪ পরগনার ২ জন, পূর্ব বর্ধমানের ২ জন, মালদহের ২ জন, উত্তর দিনাজপুর ২ জন এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের ২ জন করে যাত্রী রয়েছেন। জেলার ১০৪৫ জনের মধ্যে ডোমকল ও জলঙ্গির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পরিযায়ী শ্রমিকদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১০টি মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিটি মেডিক্যাল টিমে একজন মেডিক্যাল অফিসার-সহ পাঁচ জন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক রয়েছেন। করোনার উপসর্গ থাকলে বহরমপুর কোর্ট স্টেশন চত্বর থেকে লালারস সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। স্টেশন চত্বরে রাখা ছিল ৪টি অ্যাম্বুল্যান্স। শারীরিক পরীক্ষার পরে তাঁদের হাতে একটি করে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৪০টি বেসরকারি ও ২৫টি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস ও পাঁচটি ছোট গাড়ি নেওয়া হয়েছে। ওই সব গাড়ি করে আগে থেকে চিহ্নিত রুট ও বাড়ির কাছাকাছি নামানোর জন্য চিহ্নিত ড্রপ-পয়েন্ট করা ছিল। সেখানেই যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE