Advertisement
E-Paper

ধুলিয়ানে শিশুকে অপহরণের চেষ্টা, ধৃত মহিলা

বেলা সাড়ে দশটা হবে। বাড়ির সামনেই ফাঁকা জায়গাটায় খেলা করছিল বাচ্চা মেয়েটি। বয়স বছর আড়াই। বড়রা যে যাঁর নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। মেয়েরা রান্নাঘরে। হঠাৎই তারা দেখে শিশুটি নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০২:২৭
ধৃত রাহেদা বিবি।

ধৃত রাহেদা বিবি।

বেলা সাড়ে দশটা হবে। বাড়ির সামনেই ফাঁকা জায়গাটায় খেলা করছিল বাচ্চা মেয়েটি। বয়স বছর আড়াই। বড়রা যে যাঁর নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। মেয়েরা রান্নাঘরে। হঠাৎই তারা দেখে শিশুটি নেই। কোথায় গেল? খোঁজ করতে জানা যায়, কোনও এক মহিলা তাকে কোলে করে বড় রাস্তার দিকে নিয়ে গিয়েছে।

রবিবার দুপুরে এই ‘শিশু-চুরি’র ঘটনাতেই তোলপাড় পড়ে গেল ধুলিয়ান থেকে নিমতিতা। শেষপর্যন্ত অবশ্য শিশুটিই ধরিয়ে দিল সন্দেহভাজন মহিলাকে। মহিলার অস্বাভাবিক আচরণ ও বাচ্চাটির কান্নাতে সন্দেহ জাগে। হাতেনাতে ধরা হয় মহিলাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মহিলার নাম রাহেদা বিবি। তার বাড়ি কান্দির বড়ঞা থানার কুলি গ্রামে। আড়াই বছরের ওই শিশুটির নাম তোসিফা ইয়াসমিন। তার বাবা মানারুল হক ধুলিয়ানেই এক প্রাইভেট গাড়ির চালকের কাজ করেন। বাড়ি ধুলিয়ান শহর লাগোয়া হাউসনগর গ্রামে।

ঠিক কী ঘটেছিল?

মানারুল বলেন, “বাড়ির সামনেই ফাঁকা জায়গায় নিজের মনে খেলা করছিল মেয়ে। স্ত্রী-সহ সকলেই বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎই খেয়াল পড়ে বাড়ির সামনে তোসিফা নেই। খোঁজ করতেই জানতে পারি মেয়েকে কোলে করে এক মহিলা ডাকবাংলোর দিকে গিয়েছে। ছুটে যাই সে দিকে। সেখানে যেতেই জানা যায়, এক মহিলা যাত্রিবাহী একটি ম্যাক্স গাড়িতে উঠে সাজুর মোড়ের দিকে গিয়েছে। তার কোলে একটি শিশু ছিল। বাচ্চা মেয়েটি খুব কাঁদছিল।”

আর দেরি করেননি মানারুল। তখনই স্থানীয় কয়েক জনকে সঙ্গে করে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন। এক-এক জন এক-এক দিকে দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যান। রাস্তার মধ্যে একাধিক গাড়িতে তল্লাশিও করা হয়। প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে নিমতিতা রেলগেটের কাছে ওই দলেরই এক জনের হঠাৎ চোখে পড়ে একটি গাড়ি। একটি শিশুকে কোলে নিয়ে বসে রয়েছে এক মহিলা। হাবেভাবে কিছু যেন লুকোচ্ছেন। কোলের বাচ্চাটি অঝোরে কেঁদে চলেছে। কান্না থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বছর পঁচিশের ওই মহিলা। এর পরই গাড়িটিকে থামানো হয়। গাড়ি থেকে নামানো হয় ওই মহিলাকে। খবর দেওয়া হয় মানারুলকে। তিনি তখন মেয়ের খোঁজে অন্যত্র। খবর পেয়েই ছুটে যান নিমতিতায়। বাবাকে দেখে শিশুটিও তখন কান্না থামিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাবার কোলে।

‘ছেলেধরা’ চিনতে তখন আর কারও বাকি নেই। স্থানীয় লোকজন শুরু করেন গণধোলাই। ঘটনাস্থলে থাকা সিভিক কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার করে মহিলাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুতি থানায় নিয়ে যায় মহিলাকে। নিয়ে যাওয়া হয় শিশু-সহ তার বাবাকেও। অভিযোগ দায়েরের পর গ্রেফতার করা হয় মহিলাকে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪টি সিমকার্ড-সহ ২টি মোবাইল ফোন।

যে যাত্রিবাহী গাড়ি করে শিশুটিকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল ওই মহিলা, সেই গাড়িতেই ছিলেন অরঙ্গাবাদের বাসিন্দা সুমেদা বিবি। তিনি বলেন, “গাড়িতে ওঠার পর থেকেই শিশুটি খুব কাঁদছিল। কেন কাঁদছে জিজ্ঞেস করলে সে শিশুটিকে নিজের ভাইয়ের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়। বারবার মুখে কাপড় দিয়ে শিশুটির কান্না থামানোর চেষ্টা করছিল। আমরাও আর বিষয়টিকে সে ভাবে গুরুত্ব দিইনি।”

তোসিফার বাবা মানারুল জানান, ওই মহিলাকে তিনি চেনেন না। কখনও দেখেছেন বলেও মনে পড়ে না। এর পিছনে কোনও পাচারচক্র রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Woman kidnap children
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy