Advertisement
E-Paper

কোথাও ৭ দিন, কোথাও ১ মাসের শিশু কোলে পরীক্ষা কেন্দ্রে টেট পরীক্ষার্থী মায়েরা

মুর্শিদাবাদে বহু এমন পরীক্ষার্থী ছিলেন, যাঁদের কোলে বাচ্চা। কিন্তু বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া যাবে কী করে? এগিয়ে এলেন বাবারা। তাঁরাই সামালালেন বাচ্চাদের। পরীক্ষা দিলেন মায়েরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০১
সন্তানকে সামলাচ্ছেন বাবা, মা টেট পরীক্ষা দিচ্ছেন।

সন্তানকে সামলাচ্ছেন বাবা, মা টেট পরীক্ষা দিচ্ছেন। — নিজস্ব ছবি।

কারও সন্তানের বয়স ১০ দিন। কেউ আবার মা হয়েছেন দু’মাস হল। নিজে পরীক্ষা দিতে ঢুকলে বাচ্চাকে সামলাবে কে? এই প্রশ্নে যখন জেরবার টেট পরীক্ষার্থী মায়েরা, তখন মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে এলেন স্বামীরা। কোথাও নিজে টেট পরীক্ষা না দিয়ে বাইরে বসে বাচ্চা আগলালেন বাবা, কোথাও আবার পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে গাছের তলায় বসে ঠাকুমা সামলালেন একরত্তিকে, পাশে ঠাঁয় বসে বাবা। মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে টেট-দৃশ্য হয়ে ধরা রইল এই সমস্ত টুকরো ছবিই।

কান্দির সুমনা মণ্ডল। টেট পরীক্ষার্থী সুমনার পরীক্ষাকেন্দ্র ডোমকল গার্লস কলেজ। কোলে দু’মাসের মেয়ে অদ্রিকা। পর্ষদের নির্দেশিকা— পরীক্ষা শুরুর দু’ঘণ্টা আগেই পৌঁছতে হবে কেন্দ্রে। প্রায় পাঁচঘন্টা একরত্তিকে সামলানোর দায়িত্ব বাবার উপর। আর সেই কারণে বাবা পূর্ণচন্দ্র মন্ডলের দেওয়া হল না নিজেরই পরীক্ষা! পূর্ণচন্দ্রের পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছিল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায়। স্ত্রীকে পরীক্ষা দেওয়াতে মেয়ে কোলে নিয়েই কেটে গেল পাঁচ ঘন্টা। বাদ পড়ল নিজের পরীক্ষা। পূর্ণ চন্দ্র বলছেন, ‘‘আমি একটা অন্য কাজ করি। আমি চাই সুমনা প্রতিষ্ঠিত হয়ে সামাজিক সম্মান পান। তাই নিজে পরীক্ষা না দিয়ে ওঁকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিলাম।’’

অপর এক টেট পরীক্ষার্থী সাথী সুলতানার বাড়ি লালবাগে। পরীক্ষার সিট পড়েছিল ডোমকল গার্লস কলেজে। তাঁর সদ্যজাত শিশুর মাত্র ১০ দিন বয়স। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বাবা জাইদুল মোল্লা এবং ঠাকুমা সিরিন বানু সামলালেন সদ্যোজাতকে। খিদে পেলে ফুপিয়ে কেঁদে উঠছে সদ্যোজাত। সাড়ে চার ঘন্টায় অন্তত তিন বার পাউডার দুধ খাওয়াতে হয়েছে শিশুটিকে। পরীক্ষা দিয়ে মা বেরোতেই শিশুর কান্না জাদুর মতো উধাও। হাসি বাবা, ঠাকুমার মুখেও।

রবিবার রাজ্য জুড়ে হয়ে যাওয়া টেট পরীক্ষায় মুর্শিদাবাদের টেট পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ৭০ হাজার। পরীক্ষা কেন্দ্র ১৪৭ টি। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন পরীক্ষার্থীরা। বিশেষ করে, শিশুদের নিয়ে ভাবনায় ছিলেন মায়েরা। কিন্তু বাবারা এগিয়ে আসায় সেই সমস্যা মিটেছে। এ বার সবার আশা একটাই, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগে চাকরি জুটবে ঠিক।’’

TET 2022
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy