প্রতীকী ছবি।
স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বেকার যুবক যুবতীদের জন্য ‘কর্মসাথী’ প্রকল্প ঘোষণা করলেও মুর্শিদাবাদ জেলায় তা নিয়ে তেমন হেলদোল চোখে পড়েনি প্রশাসনের। নতুন এই সরকারি প্রকল্প চালু হওয়ার পরে প্রায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জেলার ব্লক এবং মহকুমা পর্যায়ে সাকুল্যে তিনশো আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর তাতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের।
এই ‘অনাগ্রহের’ কারণ হিসেবে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের দাবি, প্রচারের অভাব। গ্রামীণ জনপদে বেকারদের কাছে এ ব্যাপারে প্রচার না থাকায় অনেকের কাছেই এই প্রকল্পের সুবিধা-অসুবিধা এমনকি কোথায় আবেদনপত্র পাওয়া যাবে, কবে তা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ— অজানা রয়ে গিয়েছে সবই।
প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে সদ্য তরুণ বয়সে পৌঁছনো ছেলেমেয়েরা মাঝারি বা ছোট মাপের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ভর্তুকির পাশাপাশি মুলধনের দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণও দেবে রাজ্য সরকার। জেলাস্তরে এই প্রকল্প নিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠন ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত কার্যসমিতির বৈঠকে আলোচনার পর মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেপ্টেম্বরের গোড়ায় সরকারি ভাবে প্রতিটি ব্লকে এই প্রকল্প চালু হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি। সরকারি নিয়মে প্রতিটি ব্লকের রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ইচ্ছুক আবেদনকারী ঋণ পেতে পারেন। মুলধনের ১৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকির সুযোগ নিয়ে বেকার যুবক যুবতীরা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ পাবেন। মুলধনের ৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে উদ্যোগীকে। জেলার প্রতিটি ব্লকের ব্লক অফিস ও মহকুমা আধিকারিকের দফতর থেকে এই প্রকল্পের আবেদনপত্র পাওয়া যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সুযোগ নিতে হলে ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৫০ এর মধ্যে। কিন্তু ঋণের সরকারি সুবিধা সত্ত্বেও স্বনির্ভর হওয়ার সদিচ্ছা নেই। সারগাছির বাসিন্দা তফিকুল ইসলাম স্পষ্টই বলেন, “মূলধনের অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারছি না। এমন কোনও সরকারি প্রকল্প রয়েছে বলেই জানি না। কোথায় গেলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে, জানা নেই।” বহরমপুর ব্লকের সুকান্ত মণ্ডল বলছেন, “আমি সংবাদপত্রে পড়েছিলাম অন্য জেলায় এই ধরনের প্রকল্প শুরু হয়েছে। সে কথা জানতে ব্লক অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে দিন পাঁচেক ঘোরার পরে জানলাম এমন একটা প্রকল্প চালু হয়েছে। তবে তার বেশি কিছুই জানালেন না ওঁরা।’’ কর্মসাথী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক নিরঞ্জন বিশ্বাস। প্রতিটি ব্লকে গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে এবং আগামী দিনে আরও আবেদনপত্র জমা পড়বে বলে দায় সেরেছেন তিনি। তা হলে কি প্রচারের অভাবেই প্রকল্প নিয়ে ধোঁয়াশায় উদ্যোগপতিরা? প্রকল্প আধিকারিকের পাল্টা প্রশ্ন, “প্রচার না থাকলে আবেদনপত্র জমা পড়ল কী করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy