উৎপলা নন্দী নয়, নবকুমার দত্ত।
সিপিএম নেতা অরুণ নন্দীকে খুনটা করেছিল উৎপলার প্রেমিক নবকুমার। জেরায় ভেঙে পড়ে সে। মেনে নেয়, ‘কাজটা’ সেরেছিল সে-ই।
জেলার এক পুলিশকর্তা মঙ্গলবার জানান, সরকারি হাসপাতালের নার্স উৎপলা অল্পবিস্তর ‘ছুরি-কাঁচি’ চালাতে পারে। স্বামীকে সে-ই খুন করে, জেরার প্রথম পর্বে এমনই ধারণা দিয়েছিল নব। তবে, তাদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় ছবিটা বদলে যায়। নব স্বীকার করে, ‘কাজটা’ সে-ই করেছে।
নবর কথায় তদন্তকারীরাও যে ভুল বুঝেছিলেন, ওই কর্তা তা কবুল করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা হয়েছিল, ওই মহিলা নার্স। ছুরি, কাঁচি চালানোয় তার দক্ষতা থাকা স্বাভাবিক। নব যে কথাটা বানিয়ে বলছে, প্রথম দিকে বুঝতে পারিনি।” জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, সে রাতে স্বামীর পা চেপে ধরে ছিল উৎপলা। বুকে বসে অরুণবাবুর গলায় ভোজালি মারে নব। ডাকাতির গল্পটা বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে স্বামীর দেহ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল উৎপলা। যাতে মনে হয় ডাকাতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে। স্বামীর মোবাইলও ফেলে দেয় রক্ত ভেজা মেঝেতে। দু’জনেই শৌচাগারে হাত ধুয়ে ফেলে। ভোজালির রক্ত মোছে বালিশে। পরে ডাকাতির গল্প ফাঁদে। রাতেই নবকুমার চলে গিয়েছিল নবদ্বীপধাম স্টেশনে। শেষ রাতে ডাউন তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ধরে শিয়ালদহ রওনা হয়ে যায় সে।
এ দিনই অরুণবাবুর বাড়িতে পুলিশ নব-উৎপলাকে নিয়ে যায়। ২২ মাস আগের সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করানো হয় সেখানে। পুলিশের সামনে নিঁখুত অভিনয় করে উৎপলা দেখিয়ে দেয় কী করে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই খুনটা সেরে ফেলেছিল তারা। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন রাতে নবকুমার সাড়ে আটটা নাগাদ অরুণবাবুর বাড়িতে আসে। সেই রাতে নবকুমারকে উৎপলা তিন তলার সিঁড়িরঘরে লুকিয়ে রাখে। যেখানে রাখা ছিল তার নিজের হাতে কেনা ধারালো ভোজালি। পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ অরুণবাবু খুন হওয়ার পরে উৎপলা এফআইআর দায়ের করে দাবি করে, তার বেশ কিছু গয়নাও খোয়া গিয়েছে। এ দিন উৎপলার ঘর থেকে লুকিয়ে রাখা সেই সব গয়না উদ্ধার করেছে পুলিশ।