Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এক বেলা কাটিয়েই জঙ্গিপুর থেকে ফিরলেন হাজি নুরুল

‘বহিরাগত’ প্রার্থী তিনি। এক বেলার জন্য এসেছিলেন জঙ্গিপুরে। কয়েক দফা কর্মিসভা করার পরে সোমবার গভীর রাতেই বারাসতে নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। তাঁর কথায়, “নির্বাচন পর্যন্ত এখানেই থাকব নাকি বাড়ি থেকে যাতায়াত করব, তা এখনও কিছু ঠিক করিনি। আগের কেন্দ্র বসিরহাটও আমার বাড়ি থেকে ১০৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। নিয়মিত যাতায়াত করে ভোট পরিচালনা করেছি সেখানে।

বিমান হাজরা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০০:৪১
Share: Save:

‘বহিরাগত’ প্রার্থী তিনি। এক বেলার জন্য এসেছিলেন জঙ্গিপুরে। কয়েক দফা কর্মিসভা করার পরে সোমবার গভীর রাতেই বারাসতে নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। তাঁর কথায়, “নির্বাচন পর্যন্ত এখানেই থাকব নাকি বাড়ি থেকে যাতায়াত করব, তা এখনও কিছু ঠিক করিনি। আগের কেন্দ্র বসিরহাটও আমার বাড়ি থেকে ১০৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। নিয়মিত যাতায়াত করে ভোট পরিচালনা করেছি সেখানে। জঙ্গিপুরের দূরত্ব আর একটু বেশি ২০০ কিলোমিটার।” কিন্তু নিজের আবাদি রাজনৈতিক জমি ছেড়ে জঙ্গিপুরের রুক্ষ মাটিতে আসা কেন? কিছুটা থমকে তৃণমূল নেতার জবাব, “নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বিশেষ কারণে জঙ্গিপুরে দাঁড় করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে কারণটা কী দিদি খোলসা করে বলতে চাননি। আমিও জিজ্ঞেস করিনি।”

মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভা এলাকায় ৮৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ৫টি তৃণমূলের দখলে। ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে একমাত্র সাগরদিঘি তৃণমূলের দখলে থাকলেও সেখানেও গোষ্ঠীকোন্দল এতটাই প্রকট যে দু’দু’বার সভা ডেকেও বাজেট পাশ করাতে পারেনি তারা। আর দলের জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা মাত্র এক। ‘বিষম’ এই রাজনৈতিক সমীকরণ ভালই জানা আছে নুরুল ইসলামের। তবু ম্যাট্রিকের গণ্ডি না পেরোনো নুরুল ইসলামের বিশ্বাস মুর্শিদাবাদের মানুষ ‘পরিবর্তনের জাদু’ দেখাবেন এবার। জঙ্গিপুর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া লোকসভা কেন্দ্র। এই নির্বাচনে তাঁর ছায়া নিঃসন্দেহে একটা বড় ফ্যাক্টর। নুরুল মানতে চাননি সে কথা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ রাজ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছায়াই কাজ করবে না। জঙ্গিপুরে জয় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।”

জঙ্গিপুরের তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অবশ্য ‘বহিরাগত’ প্রার্থীকে নিয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী নয়। এই নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে দলে। জেলার এক তৃণমূল নেতা বলেন, “সাগরদিঘি বিধানসভায় বহিরাগত প্রার্থীকে আনায় গোষ্ঠীকোন্দল চরমে উঠেছে। ফের লোকসভা কেন্দ্রে বহিরাগত প্রার্থী না আনলেই ভাল হত।” তবে এই সব জল্পনা ফুৎকারে উড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য শেখ ফুরকান বলেন, “জঙ্গিপুরের কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীরাও তো বাইরের লোক। একজনের বাস দিল্লিতে, অন্যজন এখন থাকেন বহরমপুরে। ফলে আমাদের প্রার্থী নিয়ে এই সব কথা তোলা অবান্তর।”

সোমবার প্রথম জঙ্গিপুরে এসে হাজি নুরুল ইসলাম ওঠেন উমরপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি হোটেলে। সেখানে শ’তিনেক কর্মী তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন। ছিলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিপ্রসাদ ধর। প্রণববাবু জঙ্গিপুরে ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচন লড়তে এসে উঠেছিলেন মুক্তিবাবুর বাড়িতেই। এখন মুক্তিবাবু তৃণমূল শিবিরে। জঙ্গিপুরে লড়াইটা যে কঠিন তা মানছেন তিনিও। দলের প্রার্থী কোথায় থাকবেন, কী ভাবে, কবে থেকে প্রচারে নামবেন জানা নেই তাঁর। এই সব তথ্য জানা নেই শেখ ফুরকানেরও। তিনি বলেন, “মাস দুই থাকার জন্য হোটেল-সহ কয়েকটি ঘর দেখানো হয়েছে নুরুল ইসলামকে। তিনি এখনও তাঁর কর্মসূচি বা থাকার বিষয়ে কিছু জানাননি।” স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের ভোট প্রচারটা ঝিমিয়েই জঙ্গিপুরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

biman hazra haaji nurul jangipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE