Advertisement
E-Paper

ফরাক্কায় গণধর্ষণ, অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চান ধর্ষিতা

এক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় দুই নাবালক-সহ চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ওই দুই যুবকের নাম রোসেন সোরেন ও অর্জুন সোরেন। শুক্রবার পুলিশ তাদের আত্মীয় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় জড়িত লেবা ওরফে গেদা কিস্কু নামে আরও এক যুবকের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় দুই নাবালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় হতবাক এলাকার বাসিন্দারা।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩৪

এক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় দুই নাবালক-সহ চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ওই দুই যুবকের নাম রোসেন সোরেন ও অর্জুন সোরেন। শুক্রবার পুলিশ তাদের আত্মীয় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় জড়িত লেবা ওরফে গেদা কিস্কু নামে আরও এক যুবকের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় দুই নাবালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় হতবাক এলাকার বাসিন্দারা।

যদিও বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় কিছু সিপিএম সমর্থক, দু’পক্ষই দলের সমর্থক হওয়ায় বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু এত সহজে দোষীরা পার পেয়ে যাবে তা মানতে পারেনি নির্যাতিতা মেয়েটি। সে রুখে দাঁড়ালে পরিবারের লোকেরা থানায় অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো এ দিন রাতে নির্যাতিতার মামা থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই পুলিশ তদন্তে নেমে শুক্রবার ভোরে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় বাবা-মা মারা যাওয়ায় মামাবাড়িতেই থাকে ওই তরুণী ও তার দাদা। প্রতিদিনের মতো এ দিনও ওই তরুণী গ্রামের পূর্ব মাঠে কাঠ কুড়োতে গিয়েছিল। অন্যান্য দিন মামার মেয়ে সঙ্গে গেলেও এ দিন সে একাই গিয়েছিল। অন্য দিকে, একই মাঠে গরু চরাতে গিয়েছিল গ্রামেরই তিন যুবক ও বছর দশেকের দুই নাবালক। একা দেখতে পেয়ে ওই যুবকরা গল্পের আছিলায় ওই তরুণীকে কাছে ডাকে। অভিযুক্তরা পূর্ব পরিচিত হওয়ায় মেয়েটি তাদের কাছে যায়। অভিযোগ, তখনই ওই তিন যুবক একে একে তার উপর অত্যাচার চালায়। দুই নাবালক তখন তার হাত পা চেপে ধরে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে ওই তরুণী বাড়িতে সব কথা খুলে বলেন। তরুণীর মামা বলেন, “প্রতিদিনই ওই মাঠে আমার মেয়ে ও ভাগ্নি জ্বালানি কুড়োতে যায়। এ দিন ভাগ্নি একা গিয়েছিল। একা পেয়ে ওরা তার উপরে অত্যাচার চালায়।”

খবর জানার পর গ্রামের দু’একজন গ্রামবাসীকে বিষয়টি জানান ওই তরুণীর মামা। কয়েকজন গ্রামবাসী তখন লোকলজ্জার কারণ দেখিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বলেন। দু’পক্ষই সিপিএমের সমর্থক হওয়ায় কয়েকজন সিপিএম সমর্থকও তাতে যোগ দেন। কিন্তু ওই তরুণী দোষীদের চরম শাস্তির পক্ষে অটল থাকায় তারা পিছু হটেন। শেষ পর্যন্ত ওই নির্যাতিতাকে সঙ্গে নিয়ে তার মামা-সহ আত্মীয়রা থানায় যান। দোষীদের বিরুদ্ধে ৩৭৬ (ডি) ধারায় গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়। ঘটনার কথা জানতে পেরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে কান্নন শুক্রবার সকালে ফরাক্কা থানায় আসেন। তিনি ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা জেরায় তাদের দোষ স্বীকার করেছে।

এ দিন অভিযুক্ত দুই যুবককে জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। অন্য দিকে, ধৃত দুই নাবালককে বহরমপুর জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পাঠানো হয়। সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চৌধুরী বলেন, “এ দিন নির্যাতিতাকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয় ওই তরুণী। কিন্তু জঙ্গিপুর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে পাঠানো হলে শারীরিক অসুবিধার কারণে তা করা যায়নি।” এ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকা ধৃত রোসেন সোরেন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে বলে, “ওই কিশোরীর সঙ্গে আমার বছর খানেক ধরেই সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমি একা দেখতে পেয়ে কাছে ডাকি। তারপর বন্ধুরা মিলে ওর উপর অত্যাচার করি। বাধা দিতে চেষ্টা করলে ওই দুই নাবালক ওর হাত পা চেপে ধরে।” রোসেনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছে ওই নির্যাতিতা তরুণী। তাঁর কথায়, “রোসেনের সঙ্গে আমার কোনও দিন সম্পর্ক ছিল না। প্রত্যেকের কঠোর সাজা চাই আমি। পুলিশের কাছেও তা বলেছি।” ফরাক্কার বাসিন্দা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাত খান বলেন, “কে কোন দলের সমর্থক তা বিচার্য বিষয় নয়। ওই তরুণী যাতে ন্যায় বিচার পায় পুলিশের তা দেখা উচিত।”

gang rape farakka punishment for accused biman hazra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy