Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি অসুর, দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজে হাত আগেই

গত কয়েকবছরের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে রথের দিনে কাঠামো পুজো সম্পন্ন করার পর দুর্গা প্রতিমা গড়ায় হাত দিয়ে বিস্তর ভুগেছেন মৃৎশিল্পীরা। বাদলা দিনে মূর্তি শোকাতে কালঘাম ছুটেছে। তাই এ বার রথের রশিতে টান পড়ার আগেই মুর্শিদাবাদ জেলার পটুয়া পাড়াগুলিতে মাটির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে সাজপোশাক, রং ও চক্ষুদানের মতো কিছু কাজ।

অনল আবেদিন

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০০:১৩
এতটাই এগিয়ে গিয়েছে কাজ। বহরমপুরে নিজস্ব চিত্র।

এতটাই এগিয়ে গিয়েছে কাজ। বহরমপুরে নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েকবছরের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে রথের দিনে কাঠামো পুজো সম্পন্ন করার পর দুর্গা প্রতিমা গড়ায় হাত দিয়ে বিস্তর ভুগেছেন মৃৎশিল্পীরা। বাদলা দিনে মূর্তি শোকাতে কালঘাম ছুটেছে। তাই এ বার রথের রশিতে টান পড়ার আগেই মুর্শিদাবাদ জেলার পটুয়া পাড়াগুলিতে মাটির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে সাজপোশাক, রং ও চক্ষুদানের মতো কিছু কাজ।

মৃৎশিল্পীদের দাবি, কয়েক বছর ধরে দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে বৃষ্টিপাত এক প্রকার নিয়ম হয়ে গিয়েছে। ফলে তখন প্রতিমা শুকানো খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিমা না শুকোলে রঙের কাজ করা যায় না। এই কারণে জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরু থেকেই দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। ওই মৃৎশিল্পীরা জানান, শাস্ত্র মেনে রথের দিন থেকে কাজ শুরু করলে অনেক পুজো কমিটির বরাতে দুর্গাপ্রতিমা জুটবে না। তাই উৎসবের কথা ভেবে শাস্ত্রীয় বিধিকে তাঁরা কিছুটা পাশ কাটিয়েই প্রতিমা নির্মাণ করছেন আগে।

লালবাগ শহরে রয়েছে মৃৎশিল্পী প্রভাস সূত্রধরের কারখানা। তাঁকে এ বছর ৯টি দুর্গা প্রতিমা গড়তে হবে। ইতিমধ্যে ৩টি প্রতিমার মাটির কাছ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রভাসবাবু বলেন, “শাস্ত্র মতে রথের দিন কাঠামো পুজো করার পর মাটির কাজ শুরু করতে হয় ঠিকই। কিন্তু ওই বিধি মানতে গেলে মাত্র ৯০ দিনে সপরিবার দুর্গার ৯টি মূর্তি গড়া কোনও মতেই সম্ভব নয়। তার উপরে রয়েছে পুজোর মুখে লাগাতার বৃষ্টিপাতের ঘটনা। তাই জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিন থেকেই মূর্তি গড়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। আর সেই কারণেই এরই মধ্যে ৩টি প্রতিমার কাজ শেষ করতে পেরেছি।” তিনি অবশ্য রথের দিন অন্য দুর্গা প্রতিমার কাঠামো পুজোও করেন। এ ভাবেই তিনি শ্যাম ও কুল দুই-ই রক্ষা করেন।

বহরমপুর শহরের খাগড়া পুলিশ ফাঁড়ির কাছে রয়েছে মৃৎশিল্পী অসীম পালের কারখানা। তাঁকে এ বার ১৩টি পুজো কমিটি প্রতিমা নির্মাণের বায়না দিয়েছেন। তার মধ্যে দু’টি প্রতিমা যাবে কান্দি ও সাঁইথিয়া শহরে। ওই দু’টি মূর্তি গড়ার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে।

অসীমবাবু বলেন, “পুজোর মুখে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা ছাড়াও রয়েছে রয়েছে শ্রমিক সমস্যা। সে সব কথা ভেবেই রথের অনেক আগেই প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি।” বহরমপুর শহরের গাঁধী কলোনির মৃৎশিল্পী শিবশঙ্কর পালের হাতে রয়েছে ১৩টি দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ। তার মধ্যে আবার থিম পুজোর মূর্তি রয়েছে ৩টি। একটি চাঁদির মূর্তি, একটি বাঁশের মূর্তি ও অন্যটি ধানের মূর্তি। শিবশঙ্করবাবু বলেন, “ইতিমধ্যে ২টি মূর্তি গড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েক বছর ধরে পুজোর সময় বৃষ্টি হওয়ায় এ বার আগাম প্রতিমা নির্মাণের কাজে হাত লাগিয়েছি।”

বহরমপুর শহরের গোরাবাজার এলাকার নবারুণ সমিতির পুজো কমিটির কর্তা অতীশ সিংহ বলেন, “শেষ প্রহরে তড়িঘড়ি প্রতিমা নির্মাণের থেকে হাতে সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে কাজ করলে সে কাজ ভাল হওয়া স্বাভাবিক। তাতে খুশি সবাই।”

anal abedin baharampur durga puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy