Advertisement
E-Paper

ভিড় সামলাতে কড়া নজরদারি

বসন্ত আসার অনেক আগে থেকেই শহরে ওঁরা আসতে শুরু করেন। ওঁদের ভিড়ে পথঘাটের ছবিটা রোজ একটু একটু করে বদলাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত দোলের আনন্দবসন্ত সমাগমের দিনে সেই ভিড় জনপ্লাবনের চেহারা নিয়ে ভাসিয়ে দেয় নদী পাড়ের দুই জনপদের মঠ-মন্দির, পথঘাট, দোকান-বাজার, অতিথিশালার সস্তা ঘর কিংবা দামি হোটেলের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০৬

বসন্ত আসার অনেক আগে থেকেই শহরে ওঁরা আসতে শুরু করেন। ওঁদের ভিড়ে পথঘাটের ছবিটা রোজ একটু একটু করে বদলাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত দোলের আনন্দবসন্ত সমাগমের দিনে সেই ভিড় জনপ্লাবনের চেহারা নিয়ে ভাসিয়ে দেয় নদী পাড়ের দুই জনপদের মঠ-মন্দির, পথঘাট, দোকান-বাজার, অতিথিশালার সস্তা ঘর কিংবা দামি হোটেলের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর। ফাঁকা থাকে না রাস্তার ধারের বারন্দাও। এই জনপ্লাবনে ভেসে শহরে আসেন বহু অজ্ঞাতপরিচয় মানুষ। তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যই যে খুব সাধু এমন কথা বুকে হাত দিয়ে কেউই বলতে পারেন না। ফলে দোল উৎসবে লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে তটস্থ থাকতে হয় নদিয়ার প্রশাসনকে। শুধু নিরাপত্তা নয়, সঙ্গে আছে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নও। শহরে দোলের মরসুমে পায়ে পায়ে আমেরিকা, ইংল্যাণ্ড, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মান, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জাপানের নানা পর্যটকও আসেন। সবমিলিয়ে দোলের সময় পুলিশ কর্তাদের রক্তচাপ বাড়াটা খুবই স্বাভাবিক।

নবদ্বীপ-মায়াপুরের দোল নিয়ে পুলিশ থেকে সাধারণ প্রশাসন, পুরসভা থেকে পঞ্চায়েতের মাথাব্যথার অন্ত নেই। আর এই জন্য প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তত একমাস আগে থেকে। পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, নবদ্বীপ-মায়াপুর মিলিয়ে শুধু দোলের দিন লক্ষাধিক বহিরাগত মানুষ থাকেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক হাজার আবার বিদেশি। ছোটবড় মিলিয়ে কয়েক হাজার গাড়ি আসে। গঙ্গার দু’পাড়ে দুই শতাধিক মন্দিরের অতিথিশালা, সস্তা-দামি নানা ধরনের হোটেলেই প্রধানত থাকেন ওই সব বহিরাগত পর্যটকের দল। এছাড়াও আসেন আর একদল মানুষ। যাঁরা থাকেন পথে ঘাটে মাঠে ময়দানে। কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানা বা পরিচয় নিয়ে এরা উৎসবে আসেন না। ভিড়ে মিশে থাকেন নিঃশব্দে। ভয়টা তাঁদের নিয়েই বেশি। তাঁরা কে কী উদ্দেশ্য নিয়ে আসছেন, এতবড় উৎসবে তাঁরা কী বিঘ্ন ঘটাতে পারেন তা নিয়ে সারাক্ষণ সতর্ক থাকতে হয় পুলিশকে।

এ ছাড়াও থাকে যানবাহন নিয়ন্ত্রন এবং শহরে নবাগতদের সঠিক ঠিকানা বাতলে দেওয়ার কাজ। তবে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা এবং যাতায়াতের দিকে। আইসি তপন কুমার মিশ্র বলেন, “বিভিন্ন মঠমন্দিরের নিরাপত্তা এবং আগত ভক্তদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশকর্মী এবং অফিসার থাকছেন দোল সামলাতে।” নিরাপত্তার জন্য যে সমস্ত মন্দিরে জনসমাগম বেশি হয়, সেখানে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। যেমন শুধু ইস্কনেই ছ’টি টাওয়ার হয়েছে। থাকছে সিসিটিভির ব্যবস্থাও। মায়াপুর নবদ্বীপে প্রবেশের পথগুলিতে শুরু হয়েছে তল্লাশি। মায়াপুরের দায়িত্বে দু জন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার থাকছেন। অফিসার এবং কর্মী মিলিয়ে দেড়শো অতিরিক্ত পুলিশ দোলে মোতায়েন করা হয়েছে। থাকছে আড়াইশো সিভিক ভলান্টিয়ার্স। নবদ্বীপ-মায়াপুরের মধ্যে যাতায়াতে গঙ্গা পার হওয়া বাধ্যতামূলক বলে সিভিল ডিফেন্সের ১৫ জনের একটি দল নামানো হয়েছে। এসেছে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের দুটি স্পিডবোট এবং ৬ জন বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কর্মী।

অন্যদিকে ভিড় সামাল দিতে মায়াপুরে আরও একটি অস্থায়ী জেটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন যতগুলি নৌকা চলাচল করে তাঁর থেকে আরও দশটি নৌকা বাড়ানো হয়েছে। যতক্ষন ভিড় থাকবে নৌকা চলবে। নবদ্বীপ মায়াপুর দু’জায়গাতেই দোলের জন্য যান নিয়ন্ত্রন শুরু হয়ে গিয়েছে। নবদ্বীপের শহর এলাকার জন্য বিশেষ ভাবে কিছু নির্দেশিকা পুলিশের তরফ থেকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। নবদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন হয় এমন কোন কিছু ঘটলেই পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কেননা শহরে যারা এসেছেন তাঁরা সবাই আমাদের অতিথি।” নদিয়ার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “দোলের জন্য নদীর দুই পাড়েই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনান্য পুলিশ কর্মীদের সাথে এ বার প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশ থাকছে। যাঁরা প্রতি মুহূর্তে আমাদের খবর পাঠাবেন।”

holi nabadwip
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy