Advertisement
E-Paper

মাছ সংরক্ষণের বাক্স বিলিতে কারচুপি, ক্ষোভ

বাজারে ‘হাইজেনিক ইনসুলেটেড বাক্স’ বিতরণ করা হচ্ছে শুনে দোকান ছেড়ে একটা বাক্সের আশায় কর্মকর্তাদের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব মাছ ব্যবসায়ী গৌর বিশ্বাস। তিনি যে ধরনের মাছ বিক্রি করেন তা সংরক্ষণে ওই বাক্স খুবই প্রয়োজন। বাক্স তো মিললই না উল্টে বাক্স প্রাপকদের তালিকা দেখে হতাশ তিনি। শুধু তিনি নন, বাক্স বিতরণের অব্যবস্থায় হতাশ অনেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫২

বাজারে ‘হাইজেনিক ইনসুলেটেড বাক্স’ বিতরণ করা হচ্ছে শুনে দোকান ছেড়ে একটা বাক্সের আশায় কর্মকর্তাদের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব মাছ ব্যবসায়ী গৌর বিশ্বাস। তিনি যে ধরনের মাছ বিক্রি করেন তা সংরক্ষণে ওই বাক্স খুবই প্রয়োজন। বাক্স তো মিললই না উল্টে বাক্স প্রাপকদের তালিকা দেখে হতাশ তিনি। শুধু তিনি নন, বাক্স বিতরণের অব্যবস্থায় হতাশ অনেকেই।

আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, চাকদহ রেল স্টেশনের কাছে অবস্থিত মাছ বাজারে দুঃস্থ মাছ ব্যবসায়ীদের বিনামূল্যে হাইজেনিক ইনসুলেটেড বাক্স দেওয়া হবে। দীঘর্দিন ধরে মাছ সংরক্ষণ করার পক্ষে শক্তপোক্ত ওই ধরনের বাক্স খুবই কার্যকরী। সেই মতো মঙ্গলবার সকালে ১৮ জন মাছ বিক্রেতার হাতে বাক্স তুলে দেওয়া হয়। এ দিনের ওই বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার মৎস দফতরের সহ-অধিকর্তা সম্পদ মাজি, জেলা পরিষদের মৎস ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল দেবনাথ, বিধানসভার পরিষদীয় সচিব ও হরিণঘাটার বিধায়ক তৃণমূলের নীলিমা নাগ, চাকদহ পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সুকুমার রায়-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

উদ্যোক্তাদের দাবি, আগে ব্লক বা পঞ্চায়েত সমিতির অফিস থেকে এ ধরনের বাক্স তুলে দেওয়া হত। কিন্তু তাতে অনেক প্রশ্ন ওঠায় ঠিক হয় বাজারে গিয়েই প্রকৃত দুঃস্থ মাছ বিক্রেতাদের হাতে বাক্স তুলে দেওয়া হবে। সেই কারণে এ দিন চাকদহ বাজারে উপস্থিত হয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে বাক্স তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দুঃস্থ ব্যবসায়ীদের ওই বাক্স বিতরণের কথা বলা হলেও যাঁরা বাক্স পেয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই বড় ব্যবসায়ী। কেউ বড় ইলিশ বিক্রি করেন। কেউ বা বড় চালানি কাতলা, চিংড়ি, পমফ্রেট ইত্যাদি। প্রকৃত যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের দেওয়া হয়নি।

মাছ বিক্রেতা অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, “দেখছেন না কাদের হাতে বাক্স তুলে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের প্রকৃৃত প্রয়োজন তাঁরাই পেলেন না। তিনি আরও বলেন, “মুখে বলা হচ্ছিল দুঃস্থদের দেওয়া হবে। কিন্তু, বাস্তবে তার উল্টোটা করা হল।” গৌরবাবু বলেন, “আমি যে মাছ বিক্রি করি তার জন্য এ ধরনের বাক্স খুব প্রয়োজন। সেজন্যই ওদের কাছে গিয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছে এখন হবে না, আগামীতে আবার এলে তখন দেওয়া হবে।”

যদিও মাছ ব্যবসায়ীদের একাংশের তোলা অভিযোগ মানতে চাননি চঞ্চলবাবু। তিনি বলেন, “কাদের ওই বাক্স দেওয়া হবে তার জন্য ওই বাজার কমিটির কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তারা যে তালিকা পাঠিয়েছেন সেই মতো বাক্স বিতরণ করা হয়েছে।” একই সুর সম্পদবাববুরও। তিনি বলেন, “চলতি বছরে জেলায় ৭০০ জন দুঃস্থ ব্যবসায়ীর হাতে এ ধরনের বাক্স দেওয়া হবে। ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে কাদের বাক্স দেওয়া যায় তার জন্য ব্যজার কমিটির কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তারা যেমন পাঠিয়েছেন সেই মতো দেওয়া হয়েছে।”

অন্য দিকে, চাকদহ মণীন্দ্রহাট ও বাজার ক্ষুদ্র মৎস ব্যাবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপনকুমার হালদার বলেন, “এখানে কমপক্ষে ৯০ জন মাছ বিক্রেতা রয়েছেন। তার মধ্যে জনা চল্লিশের মতো ব্যবসায়ী দুঃস্থ। যাঁরা এ ধরনের বাক্স পেলে উপকৃত হতেন। বাক্স কম থাকায় তাঁদের সবাইকে দেওয়া যায়নি।” কিন্তু এ দিন যাঁরা বাক্স পেলেন তাঁদের সবাই তো দুঃস্থ নয় তার উত্তরে খানিকে ভেবে বলেন, “এটা ঠিক, প্রাপকদের সবাই দুঃস্থ নয়। বেশ কয়েক জন রয়েছেন যাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। তাঁরা ওই তালিকায় পড়েন না।” তবে কারা সুপারিশ করেছেন তার উত্তর অবশ্য তিনি দেননি।

ranaghat hygienic insulated box pisciculture fish agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy