স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হল যুবক। শনিবার রাতে নবদ্বীপের নন্দীপাড়ার মাম্পি চক্রবর্তী (২৮) নামে এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই মাম্পিদেবীর স্বামী নবারুন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধেও। তবে তাঁরা কেউই ধরা পড়েননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার চাকুরে নবারুনের সঙ্গে বর্ধমানের দোগাছির মুদাফ্ফর গ্রামের সম্পন্ন চাষি পরিবারের মেয়ে মাম্পির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা অছিলায় তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। মাম্পিদেবীর দাদা শুভঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, “বিয়েতে দেড় লক্ষ টাকা ও দশ ভরি সোনার গয়না দিয়েছিলাম। তাও চাহিদার শেষ ছিল না। সম্প্রতি বাড়ির ধার মেটাতে দু’লক্ষ টাকা দাবি করছিল ওরা। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। এর পরিণামেই ওরা আমার বোনকে মেরে ফেলল।”
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অশান্তির জেরে গত এক সপ্তাহ নবদ্বীপে মেয়ের কাছেই ছিলেন মাম্পিদেবীর মা। শুক্রবার তিনি বাড়ি ফেরার পরে রাতে ফোন করেন মাম্পিদেবী। তাঁর মা আদুরিদেবীর দাবি, “মেয়ে বলছিল, আমার খুব ভয় করছে মা। কিন্তু আর কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ফোনটা কেটে যায়।” তারপর আর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। শুভঙ্করবাবুর অভিযোগ, “এর ঘণ্টা দুয়েক পরেই নবারুন ফোন করে বলে, তোমার বোন মারা গিয়েছে। দেখতে চাইলে হাসপাতালে চলে এসো।” তাঁর আরও দাবি, নবদ্বীপ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত অবস্থাতেই মাম্পিদেবীকে আনা হয়েছিল। এরপরেই পুলিশের কাছ অভিযোগ করেন তাঁরা। রাতেই ধরা হয় নবারুনকে। নবদ্বীপ থানার আইসি তপনকুমার মিশ্র বলেন, “মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
কান্নায় ভেঙে মাম্পিদেবীর মা বলেন, “মেয়ের উপর চরম নির্যাতন করত ওরা। ফ্যানের তলায় শুতে দিত না, ফোন ব্যবহার করতে দিত না, এমনকী নাতির কান্নায় ঘুমের অসুবিধে হয় বলে আলাদা ঘরে শুতে বলত। তারপরেও দশ বছর কাটিয়েছে আমার মেয়ে। ওদের চরম শাস্তি চাই।”
রবিবার নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতো তোলা হলে বিচারক ১৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন নবারুনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy