Advertisement
E-Paper

হকার উচ্ছেদ নিয়ে চাপানউতোর কান্দিতে

রাস্তা দখল করে থাকা হকার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কান্দির মহকুমা প্রশাসন। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন শহরের পথ-ব্যবসায়ীরা। রবিবার সকাল থেকে মহকুমা শাসকের পক্ষ থেকে শহর জুরে হকার উচ্ছেদের প্রচার শুরু করতেই পথ-ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হয়ে মহকুমা শাসক ও কান্দি পুরসভায় স্মারকলিপি দেন। মঙ্গলবার শহরে ওই ব্যবসায়ীরা একটি মিছিলও করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০০:৩২
কান্দিতে প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

কান্দিতে প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

রাস্তা দখল করে থাকা হকার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কান্দির মহকুমা প্রশাসন। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন শহরের পথ-ব্যবসায়ীরা। রবিবার সকাল থেকে মহকুমা শাসকের পক্ষ থেকে শহর জুরে হকার উচ্ছেদের প্রচার শুরু করতেই পথ-ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হয়ে মহকুমা শাসক ও কান্দি পুরসভায় স্মারকলিপি দেন। মঙ্গলবার শহরে ওই ব্যবসায়ীরা একটি মিছিলও করে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, কান্দি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে কান্দি মহকুমা আদালত সংলগ্ন একটি কালভার্ট পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ করার জন্য পূর্ত দফতর উদ্যোগী হয়। সেখানে কাজ শুরু করতে গিয়ে পূর্ত দফতর দেখে ওই রাস্তার অধিকাংশ এলাকা দখল করে বসে আছেন পথ ব্যবসায়ীরা। রাস্তার দু’ধারে চা, পান-বিড়ি, তেলেভাজার দোকান ছাড়াও ফল, কাপড়ের দোকানও আছে। রাস্তার উপর থেকে ওই ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ না করলে রাস্তাটি মেরামত করা সম্ভব নয় বলেও কান্দির মহকুমা শাসকের কাছে জানিয়ে দেন পূর্ত দফতরের কর্তাব্যাক্তিরা। পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, রাস্তার দু’ধারে যে ভাবে একের পর এক দোকান গজিয়ে উঠছে, তাতে আগামী দিনে সাধারণ মানুষের যাতায়াত করার রাস্তা থাকবে কি না সন্দেহ। তা ছাড়া, ওই রাস্তার দু’ধার উঁচু করে স্থায়ী ভাবে দোকান করে নেওয়ায় রাস্তাটি নিচু হয়ে গিয়েছে। তাতে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে যায়, তাতে পিচের চাদর দেওয়া ওই রাস্তা বেশি দিন টেঁকে না। পূর্ত দফতরের কান্দি মহকুমা সড়ক বিভাগের আধিকারিক প্রবীর বাগচি বলেন, “পিচের শত্রু জল আর ওই রাস্তা দিয়ে সারা বছর জল বয়ে যায়। তাতে রাস্তাটি খুব বেশি দিন ভালো থাকে না।” রাস্তাটি দ্রুত মেরামতিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ত দফতর। প্রবীরবাবু বলেন, ওই রাস্তায় জল নিকাশির ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, “এ বার আমরা উন্নত মানের রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

গত শনিবার কান্দি মহকুমা শাসকের দফতরে পূর্ত দফতরের কর্তাব্যক্তি, পুলিশ, পুরপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা বৈঠক করে হকার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। কান্দি বাসস্ট্যান্ড, কান্দি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার দু’ধার দখল করে যে ভাবে পথ-ব্যাবসায়ীরা ব্যবসা করছেন তাতে ওই রাস্তায় যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। ওই রাস্তা ছাড়াও কান্দি শহরের ভিতর বাজারের ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকানের পণ্য-সামগ্রী রাস্তার উপরে সাজিয়ে রেখে রমরমিয়ে ব্যবসা করছেন। তাতেও শহরের রাস্তা ছোট হয়ে যাচ্ছে। দু’টি রিকশা ভাল ভাবে পাশ কাটাতেও পারে না। কান্দির মহকুমা শাসক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, “শহরের রাস্তা দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। তাতে ওই ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা ছাড়া প্রশাসনের কাছে কোনও বিকল্প রাস্তা নেই।”

হকার উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে কান্দি পুর হকার্স ঐক্য পুনর্বাসন কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড মঙ্গলবার সংগঠনের পক্ষ থেকে কান্দি মহকুমা শাসককে স্মারকলিপি দেয়। ওই দিন বিকেলে শহরের রাস্তায় মিছিল করে ওই পথ ব্যবসায়ীরা ওই সংগঠনের দাবি আশির দশক থেকে ওই রাস্তার ধারে ৮৫ জন পথ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা শুরু করে। পরে ১৯৯৭ সালে ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হয়ে সংগঠনের সরকারি অনুমোদন আদায় করে। ওই সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন, “আমাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে, পুরসভায় কর দিই। তারপরেও একরকম প্রতিবছর আমাদের উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। ওই ভাবে ব্যবসা করা যায় না।” তাঁর দাবি, “উচ্ছেদ করতে গেলে আগে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে আমরা দোকান উচ্ছেদ করতে দেব না।” মহকুমা শাসক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, “পুনর্বাসন দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” কান্দির পুরপ্রধান কংগ্রেসের গৌতম রায় বলেন, “আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে কান্দির মহকুমা শাসককে ধন্যবাদ জানাতে চাই, প্রশাসন ওই কাজে সফল হলে শহরের সাধারণ মানুষের চলাফেরার সঙ্গে সঙ্গে শহরে যানজট অনেক মুক্ত হবে।” আগামী বৃহস্পতিবার ওই হকার উচ্ছেদ করার কথা কান্দি মহকুমা প্রশাসনের।

hawkers evicted at kandi anger kandi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy