Advertisement
E-Paper

বেসরকারি সফরে মোদী, সতর্ক রাজ্য

মোদীর এই সফর বেসরকারি হলেও খরচের একটা অংশ রাজ্যকে বহন করতে হবে। নবান্নের খবর, বিশেষ বিমানে ও বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী মেদিনীপুরে আসবেন। তার পরে হেলিপ্যাড থেকে যাত্রাপথ, সভাস্থলের যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করছে রাজ্য। তবে সভামঞ্চ থেকে মাঠের যাবতীয় খরচ প্রধানমন্ত্রীর দল বিজেপিকে করতে হবে বলে জানান নবান্নের এক কর্তা।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:৫৯
নরেন্দ্র মোদী

নরেন্দ্র মোদী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এ বারের পশ্চিমবঙ্গ সফর ‘সরকারি’ নয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এমনই বার্তা পাঠিয়েছে নবান্নে। ফলে সতর্ক রাজ্যের শাসক মহল। কেন?

রাজ্যের শাসক শিবিরের একাংশ মনে করছেন, মেদিনীপুরের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী এমন কিছু বলতে পারেন, সরকারি সফরে এলে যা বলা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সফর যে-হেতু সরকারি নয়, তাই মোদীর বক্তব্যে কৃষি ও কৃষক কল্যাণের মোড়কে রাজনীতিও থাকতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাই মোদীর সফর নিয়ে দিল্লি থেকে আগাম বার্তা দিয়ে রাখা হয়েছে।

ফসলের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর পরে ১৬ জুলাই, সোমবার মেদিনীপুরে কৃষক কল্যাণে সমাবেশ করবেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর একাধিক সফর সামলেছেন, এমন এক আমলার কথায়, ‘‘মূলত নির্বাচনী প্রচারে এলে প্রধানমন্ত্রীর সফর ‘সরকারি’ তকমা পায় না। অন্য সব সফরই সরকারি। কিন্তু ভোটের প্রায় এক বছর আগে নরেন্দ্র মোদী কেন রাজ্যে ‘বেসরকারি’ সফরে আসতে শুরু করলেন, সেটাই বড় প্রশ্ন।’’ মোদী যে-সময়ে ধানের দাম বাড়িয়ে তার কৃতিত্ব নিতে মেদিনীপুরে সভা করতে আসছেন, তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগে চিঠি লিখে যাবতীয় কৃষিঋণ মকুবের দাবি জানাচ্ছেন। ফলে রাজনৈতিক আবহ ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

নবান্নের খবর, সফরের আয়োজনের দিক থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বা বেসরকারি সফরের মধ্যে বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। সরকারি সফর হলে প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রীর স্বাগত জানানোটাই নিয়ম। আবার সফর শেষে বিদায় জানাতে হয়। সফর বেসরকারি হলে রাজ্যপাল-মন্ত্রীর আসার প্রয়োজন হয় না। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার থাকলেই চলে। রাজ্যের কোনও মন্ত্রী তাই মেদিনীপুরেও মোদীকে স্বাগত জানাতে যাবেন না। অর্থাৎ দেড় ঘণ্টার বঙ্গ সফরে রাজ্যপালকে বা তৃণমূলের কোনও মন্ত্রী মোদীর ধারেকাছে দেখতে পাওয়ার কথা নয়।

মোদীর এই সফর বেসরকারি হলেও খরচের একটা অংশ রাজ্যকে বহন করতে হবে। নবান্নের খবর, বিশেষ বিমানে ও বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী মেদিনীপুরে আসবেন। তার পরে হেলিপ্যাড থেকে যাত্রাপথ, সভাস্থলের যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করছে রাজ্য। তবে সভামঞ্চ থেকে মাঠের যাবতীয় খরচ প্রধানমন্ত্রীর দল বিজেপিকে করতে হবে বলে জানান নবান্নের এক কর্তা।

সোমবার বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বিমানে কলাইকুন্ডায় নামবেন। সাড়ে ১২টায় হেলিকপ্টারে পৌঁছবেন মেদিনীপুরে। ১টা ১৫ মিনিটে তাঁর মেদিনীপুরের মঞ্চ ছেড়ে আসার কথা। পিএমও অবশ্য রাজ্যকে প্রধানমন্ত্রীর দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করতে বলেছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পিএমও-র তালিকা মেনে সম্পূর্ণ নিরামিষ পোহা, উপমা, খাকড়া, সুপ, মশালা ছাঁচ, হাতরুটি, জিরা রাইস, ডাল, তরকারি, দই এবং মিষ্টি স্বাদের ফল রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মাত্র দেড় ঘণ্টার সফরে প্রধানমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজ সারবেন, এমন সম্ভাবনা কম। তবে এর আগে এক বার রাজ্য সফরে এসে মঞ্চের পিছনেই খোলা মাঠে টেবিল পেতে খেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারেও তেমন কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন আয়োজকেরা।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইন্দিরা গাঁধী ১৯৬৯-এ মেদিনীপুরে এবং ১৯৭১-এ খড়্গপুরে এসেছিলেন। ১৯৮৬ সালে সবংয়ের বন্যায় এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। সব সফরই ছিল সরকারি। ২০ জুলাই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ খড়্গপুর আইআইটি-র সমাবর্তনে আসছেন। সেটিও সরকারি সফর। ব্যতিক্রম শুধু মোদীর এ বারের মেদিনীপুর যাত্রা।

রাজ্যে মোদীর সফরের দিন কৃষকদের দুর্দশার প্রশ্নে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে নামবে সিপিএম। সামনে থাকবে কৃষক সভা। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলাতেই বিক্ষোভ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের অভিযোগ, কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছেন না। চাষের খরচ বাড়ছে, ঋণের বোঝাও বাড়ছে। ঋণ মকুবের কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে না।

Tour Narendra Modi Werst Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy