E-Paper

মৃত ভোটার ধরতে এ বার ভিডিয়ো কল

জেলাশাসকদের যে বার্তা কমিশন দিয়েছে, তাতে যে ভোটারের বদলে তাঁর আত্মীয় এনুমারেশন ফর্ম পূরণ এবং সই করে জমা দেবেন, সেই ভোটারদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে ফোন, সাক্ষাৎ অথবা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে হবে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৪২

—প্রতীকী চিত্র।

মৃত বা অযোগ্য ভোটার যাচাইয়ের কাজে ‘ভিডিয়ো-কল’ ব্যবহার করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ভোটারের অনুপস্থিতিতে তাঁর নিকটাত্মীয় এসআইআরের (ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন) ফর্ম পূরণ করতে পারেন। এর ফাঁক গলে কোনও অযোগ্য ভোটার যাতে তালিকাভুক্ত না হতে পারেন, তাই এই নির্দেশ। বলা হয়েছে, এখন থেকেই মৃত্যুর সব শংসাপত্র জোগাড় করে বর্তমান তালিকায় তেমন ভোটারদের নামগুলি চিহ্নিত করে রাখতে হবে। যা কার্যত আরেকটি ‘ম্যাপিং’-এর (মিল খুঁজে বের করার পদ্ধতি) মতো বলেই মনে করা হচ্ছে।

জেলাশাসকদের যে বার্তা কমিশন দিয়েছে, তাতে যে ভোটারের বদলে তাঁর আত্মীয় এনুমারেশন ফর্ম পূরণ এবং সই করে জমা দেবেন, সেই ভোটারদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে ফোন, সাক্ষাৎ অথবা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে হবে। বুঝতে হবে, যাঁর নামে ফর্ম জমা হয়েছে, তাঁর অস্তিত্ব বাস্তবে রয়েছে বা তিনি সত্যিই যোগ্য কি না। এই ব্যবস্থায় জেলা-কর্তাদের উপর আরও কিছুটা চাপ বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। পদ্ধতিটি ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং সহকারী ইআরওদের বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশও পেয়েছেন জেলাশাসকেরা। কারণ, ইআরও-রাই ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত বা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী। একই সঙ্গে ১৯৬০-র ‘দ্য রেজিস্ট্রেশন অব ইলেক্টরস রুলের’ ৯ নম্বর ধারা উল্লেখ করে কমিশন জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়েছে, শ্মশান, সমাধিস্থল, পঞ্চায়েত-পুরসভা বা হাসপাতাল থেকে গত কয়েকবছরে নথিবদ্ধ থাকা মৃত্যুর শংসাপত্র সংগ্রহ করতে হবে। চিহ্নিত করতে হবে ভোটার তালিকা ও সংশ্লিষ্ট শংসাপত্রগুলিতে থাকা নামগুলিকে। এক কর্তার কথায়, “এ ছাড়া রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার থেকে মৃত্যু-তথ্য সরাসরি পায় কমিশন। তা ছাড়াও রয়েছে রাজ্যের নিজস্ব জন্ম-মৃত্যুর পোর্টালও। ফলে এসআইআর-আধিকারিকদের কাজ শংসাপত্রের নিরিখে ভোটার তালিকায় যেন কোনও মৃত ভোটারের নাম না থাকে, তা নিশ্চিত করা। ইচ্ছাকৃত কোনও গরমিলে কড়া পদক্ষেপ হতে পারে। বিহার ও এ রাজ্যে উদাহরণ রয়েছে।”

কমিশন সূত্রের বক্তব্য, তাদের হাতে এমনিতে প্রতি বছরে জন্ম-মৃত্যুর হারের তথ্য রয়েছে। সে তুলনায় ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির তথ্যও জানে কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের বহু এলাকায় ভোটার বৃদ্ধির অস্বাভাবিক হারের তথ্যও (কোথাও কোথাও বৃদ্ধি ৪০০% পর্যন্ত) পেয়েছে তারা। ফলে তাদের অনুমান, মৃত অনেক ভোটারের নাম রয়ে গিয়েছে তালিকায়। আবার ঠিকানা বদল করা ব্যক্তিদের অনেকের নামও রয়ে গিয়েছে আগের ঠিকানায়। বৈবাহিক সূত্রে ঠিকানা এবং নামের পদবি বদল হলে দু’জন ভিন্ন ভোটার হিসেবে তালিকায় একই ব্যক্তির থেকে যাওয়ার উদাহরণও অমিল নয়। এসআইআরে এই ত্রুটিগুলি সংশোধন হওয়ার কথা। ফলে এই সব ক্ষেত্রে অসাধু উপায় ফের যাতে সক্রিয় না হতে পারে, তাই এই পদক্ষেপ।

সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে হওয়া এসআইআর-কাজ পুরোপুরি অনলাইনে হচ্ছে। তাতে ডিজিটাল মাধ্যমে সব তথ্য থেকে যাবে কমিশনের তথ্যভাণ্ডারে। তাই গোটা পদ্ধতিটি চলা প্রয়োজন মসৃণ ভাবেই। এ রাজ্যে ইআরও-রা নথি-প্রমাণ-সহ ভোটারের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন অনলাইনেই। তাই গোটা কাজটা কেমন চলছে, তা খতিয়ে দেখতে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দল রাজ্যে পাঠাচ্ছে দিল্লির নির্বাচন সদন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়-সহ সব জেলায় তাঁরা ঘুরবেন। পদ্ধতিটি কোনও ভাবে যাতে ধাক্কা না খায়, বা এর অপব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করাই তাঁদের কাজ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Video Call Special Intensive Revision Election Commission of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy