Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Jadavpur University Student Death

যাদবপুরকাণ্ডে রাজ্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে নোটিস দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

National Human Rights Commission notices to West Bengal Government and Jadavpur University over the death of a student in main hostel

অরুণ মিশ্র। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৫৯
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে নোটিস পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। স্বতঃপ্রণোদিত এই নোটিসে কমিশন জানায়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, ঘটনার আগে ডিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মৃত ছাত্রের সহ-আবাসিকেরা। কিন্তু তাঁদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষণ, সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যে উঠে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাজ এবং দায়িত্বে অবহেলার কথা। যেখানে এক জন তরুণ ছাত্রের র‌্যাগিংয়ের আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে। নোটিসে লেখা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের এই সমস্ত খবর যদি সত্যি হয়, তাতে পরিষ্কার যে ছাত্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।

যাদবপুরকাণ্ডে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী র‌্যাগিং প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করতে প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক ব্যর্থতার কারণ এবং র‌্যাগিংয়ে প্ররোচনাকারী, জড়িত-সহ অপরাধীদের শাস্তির জন্য নেওয়া বা প্রস্তাবিত পদক্ষেপের কথাও অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। রাজ্য জুড়ে ছাত্র সম্প্রদায় এবং শিক্ষক সমিতিগুলির মধ্যে র‌্যাগিং সম্পর্কে সচেতনতা মূলক প্রচার করার জন্য রাজ্য সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তারও উল্লেখ থাকতে হবে ওই রিপোর্টে। গৃহীত ব্যবস্থাগুলিও থাকতে হবে।

এই নোটিসে কমিশন উল্লেখ করেছে, কেরল বিশ্ববিদ্যালয় বনাম প্রিন্সিপাল কলেজের কাউন্সিলরে (২০০৯ সাল) একটি মামলার কথা। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট বলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান অথবা প্রশাসনের সদস্যদের কার্যকরী পদক্ষেপ না করার জন্য শাস্তি দেওয়া হবে। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কারও বিরুদ্ধে নথিভুক্ত ফৌজদারি মামলার অবস্থা সম্পর্কে জানতে রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও নোটিস জারি করা হয়েছে।

অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত রাঘবন কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলির বিষয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকেও একটি নোটিস দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, ঘটনার চার দিন পর সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। তাঁর বক্তব্য, সব সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং অনুমোদনের ক্ষমতা তাঁদের হাতে থাকে না। এই মুহূর্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দেন সুরঞ্জন দাস। এর পর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যাদবপুরেরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু গত ৪ অগস্ট অমিতাভও ইস্তফা দেন। এর পর আর নতুন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে কাউকে নিয়োগ করেননি রাজ্যপাল।

অন্য দিকে, যাদবপুরকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র‌্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণ দর্শাতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনও। বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করা হয়েছে। সোমবার বিবৃতি জারি করে কমিশন। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট র‌্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দেয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র‌্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE