Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Al-Qaeda

ধৃত জঙ্গিদের দিনভর জেরায় রাজ্যে হদিস জেহাদি চক্রের

জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পাল্টা হিসেবে দিল্লিতে হামলা করার পরিকল্পনা ছিল ওই জঙ্গিদের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৪০
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত আল কায়দা জঙ্গিদের রবিবার দফায়-দফায় জেরা করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-সহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এ দিন সল্টলেকে এনআইএ-র কলকাতা শাখার অফিসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের পাশাপাশি জঙ্গিদের জেরা করেন রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং সিআইডির অফিসারেরাও। কেন্দ্রীয় আইবি-র অফিসারেরাও গিয়েছিলেন সেখানে। তাতে এ রাজ্যে নানা জেহাদি চক্র সম্পর্কে সূত্র মিলেছে বলেও দাবি।

সূত্রের দাবি— আজ, সোমবার বিশেষ বিমানে ধৃতদের দিল্লি নিয়ে যাওয়া হতে পারে। রাজধানীর পাটিয়ালা হাউস কোর্টের বিশেষ আদালতে পেশ করা হতে পারে তাদের। কেরল থেকে মুর্শিদাবাদের যে তিন জনকে পাকড়াও করা হয়েছে তাদেরও দিল্লি নিয়ে আসা হচ্ছে। ৬ জন ধৃত আদালতের নির্দেশে ‘ট্রানজ়িট রিমান্ড’-এ এনআইএ-র হেফাজতে রয়েছে। দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র আবার জানাচ্ছে, প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পাল্টা হিসেবে দিল্লিতে হামলা করার পরিকল্পনা ছিল ওই জঙ্গিদের। অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনতে তাদের কাশ্মীরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। দিল্লিতে দশেরা-দিওয়ালির মতো উৎসবকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল এদের। গোয়েন্দারা বলছেন, পাক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি কিছু দিন ধরেই দিল্লিকে হামলার প্রধান নিশানা বানিয়েছে। দিল্লি ছাড়াও এদের তালিকায় আর কোন শহর ছিল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদ থেকে আবু সুফিয়ান, লিউইয়ন আহমেদ, আতিউর রহমান, নাজমুস সাকিব, আল মামুন কামাল ও মইনুল মণ্ডলকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ওই রাতেই এর্নাকুলাম থেকে ধরা পড়ে মুর্শিদ হাসান, ইয়াকুব বিশ্বাস, মোশারফ হোসেন নামে আরও ৩ জন।

সূত্রের দাবি, জেহাদি মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও ‘নিরীহ’ ও ‘ভালমানুষ’ সেজে থাকত ধৃতেরা এবং গোপনে রাষ্ট্রবিরোধী মতাদর্শ ছড়াত। স্থানীয় ভাবে মৌলবাদী আন্দোলন সংঘটিত করার ছকও ছিল তাদের। এই প্রসঙ্গে ডোমকল, সুতি, শামসেরগঞ্জে বেশ কিছু বেআইনি মাদ্রাসা চলার বিষয় গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে। ওই মাদ্রাসাগুলিতে স্থানীয় কোন কোন কিশোর বা যুবকের যাতায়াত ছিল, তা খোঁজ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে ধর্মীয় ক্লাসের আয়োজন করে জেহাদি মত প্রচার করা হত। সূত্রের দাবি, পুলিশের মাধ্যমেই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কারণ, জেহাদি মনোভাব স্থানীয় স্তরে কতটা শিকড় গেড়েছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে একের পর এক জঙ্গি গ্রেফতারির ঘটনায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। রাজ্যকে তারা বলে এসেছে, নজরদারির অভাবে জঙ্গিদের সেফ হেভেন-এ পরিণত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গোয়েন্দাদের মতে, সীমান্তবর্তী জেলায় বাংলাদেশ থেকে ধারাবাহিক অনুপ্রবেশের কারণে জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। যার সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। বিদেশ থেকে আসা আর্থিক সাহায্যে গড়ে উঠছে বেসরকারি মাদ্রাসা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, রাজ্যকে ওই সব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের গা-ছাড়া মনোভাবে ক্ষুব্ধ মন্ত্রক কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Al-Qaeda Terrorism NIA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE