Advertisement
E-Paper

ডাক্তারদের সময়-বিধি বেঁধে বিতর্কে নির্মল

দমানো যাচ্ছে না নির্মল মাজিকে। আয়া-রাজ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নির্মলের দেওয়া নির্দেশ কানে যাওয়া মাত্রই তা খারিজ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে একটা মাস কাটতে না-কাটতেই এ বার চিকিৎসকদের ডিউটি নিয়ে নতুন ফরমান জারি করে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে নির্মল।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০০

দমানো যাচ্ছে না নির্মল মাজিকে।

আয়া-রাজ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নির্মলের দেওয়া নির্দেশ কানে যাওয়া মাত্রই তা খারিজ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে একটা মাস কাটতে না-কাটতেই এ বার চিকিৎসকদের ডিউটি নিয়ে নতুন ফরমান জারি করে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে নির্মল।

নির্মল মাজি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি। রোগী কল্যাণ সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে সব বিভাগে অ্যাডমিশন ডে-তে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে টানা ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে হাসপাতালেই। সমিতির এই নির্দেশে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব চিকিৎসককে দিয়ে। তা নিয়ে ক্ষোভের ঢেউ উঠেছে চিকিৎসক মহলে। এই ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রোগী কল্যাণ সমিতি নিতে পারে কি না, তার সভাপতি বলেই নির্মল এই ধরনের ফরমান জারি করতে পারেন কি না— প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যেই। চিকিৎসকদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে যাবেন বলে ঠিক করেছেন।

নির্মলের এ বারের নির্দেশের লক্ষ্য মূলত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান এবং সিনিয়র চিকিৎসক-শিক্ষকেরা। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, অ্যাডমিশন ডে-র দিন দায়িত্বে থাকা প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরেরা হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন না। সকাল ৯টায় আউটডোর শুরু থেকে পরের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ওই সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের হাসপাতালেই হাজির থাকতে হবে।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, গত ৩০ মার্চ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘আমাদের দায়িত্ববোধ কোনও অংশে কম নয়। এমন এক জনের কাছ থেকে দায়িত্ববোধের পাঠ নিতে হচ্ছে, চিকিৎসক হিসেবে যাঁর কোনও দায়বদ্ধতাই নেই।’’ অন্য এক প্রবীণ চিকিৎসকের আক্ষেপ, ‘‘অমানবিক নির্দেশ। জোর করে যে-নিয়ম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তাতে চিকিৎসার মানই কমবে। এর পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সরকারি চাকরিতে আসার আগে দশ বার ভাববেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী বিহিত না-করলে সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছেন অনেক চিকিৎসক।

আরও পড়ুন: হরিপুরে মেঘ কবে কাটবে, ধন্দে কর্তারা

কী বলছেন নির্মল?

‘‘আমার স্পষ্ট কথা, এই নির্দেশ মানতে হবে। ফাঁকিবাজির দিন শেষ। চিকিৎসকদের বিশ্রামের জন্য হাসপাতালেই আরামকেদারার ব্যবস্থা করব,’’ বলেন ওই চিকিৎসক-নেতা। তাঁর মন্তব্যে ব্যথিত এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘এই ধরনের নির্দেশ জারি করে সকলকে অপমান করার কোনও দরকার ছিল না।’’

নির্মলের নির্দেশ জারি করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই। তাতে বলা হয়েছে, ‘অ্যাজ পার ডিরেকশন অব অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি (হেল্থ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার)’ অর্থাৎ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিবের নির্দেশ অনুযায়ী এই নির্দেশিকা জারি করা হল। কলেজের অধ্যক্ষ তপন লাহিড়ী বলেছেন, ‘‘এ-সব করা হয়েছে উপর মহলের নির্দেশেই।’’ যদিও স্বাস্থ্যসচিব রাজেন্দ্র শুক্ল বলেছেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না।’’

আর রহস্যটা সেখানেই।

Nirmal Maji
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy