মহাকুম্ভে ‘অব্যবস্থা’ এবং দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে রেল, কেন্দ্র ও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে একযোগে নিশানা করল বিরোধীরা। রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরে অশ্বিনী বৈষ্ণবের বদলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত বলে দাবি তাদের। যদিও জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যের শাসক দলের উদ্দেশে পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপি।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বলেছেন, “লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের জীবনরেখা রেলকে চালানো সাধারণ কাজ নয়। বিজেপির আমলে এটা বহুমুখী সার্কাসে পরিণত হয়েছে। তার ফলও মিলছে।” রেলমন্ত্রীকে ‘অর্ধেক-মন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক অবহেলা, ভুল ব্যবস্থাপনা, উদাসীনতা’র অভিযোগও তুলেছে তৃণমূল।

কুম্ভমেলায় অব্যবস্থার প্রতিবাদে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
তথ্য গোপনের অভিযোগে সরব হয়েছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর তোপ, “দেশের রাজধানীর স্টেশনে ভয়াবহ অব্যবস্থা। সত্যিটা স্বীকার করতে সরকার ও রেলের এতটা সময় লাগল। কারণ, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কুম্ভে মৃত্যুর সময়েও তথ্য গোপন করতে মৃত্যু-শংসাপত্র ছাড়া দেহ পাঠানো হয়েছিল।” রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে এবং দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে হাওড়া, শিয়ালদহ, বিধাননগর, বর্ধমান, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। ‘বিজেপি শাসনে রেলযাত্রা: মৃত্যুফাঁদ’, এমন প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, “মনুবাদী ওঁরা! অথচ হিন্দু পুণ্যার্থীদের শ্মশানে পাঠানোর ব্যবস্থা করে নিজেরা বসে বসে দেখছেন।’’ মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের আয়োজনে শিয়ালদহে বিক্ষোভে ছিলেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের ডাকেও দলের নেতা-কর্মীরা রেল ও মেট্রো স্টেশনের কাছে লাউডস্পিকার ছাড়া বিক্ষোভ করেছেন।
দিল্লির ঘটনাকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও পাল্টা সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, “রেলের গাফিলতি থাকলে, তদন্ত হবে। কিন্তু ছত্রধর মহাতোরা যখন জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, তখন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ করেছিলেন? এখন ছত্রধর তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)