জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার বিকেলে বালুরঘাট হাসপাতালে মৃত্যু হল এক স্কুল ছাত্রের। মৃত উৎপল মোহান্ত (১৭) বালুরঘাটের চকভৃগু অঞ্চলের ডাকরা এলাকার বাসিন্দা ছিল। মাত্র তিনদিন আগে, ডাকরার বাসিন্দা অশোক সরকার (৫০) নামে এক সব্জি বিক্রেতা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা যান। পরদিন এলাকায় মেডিক্যাল টিম গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত ৫ জনকে বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। কিন্তু তাদের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি বলে আত্মীয়দের অভিযোগ।
এ দিন একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া উৎপলকে ভর্তির পর দীর্ঘক্ষণ তার কোনও চিকিৎসা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট না এলেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই উৎপলের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। মৃতের কাকা সুজন মহান্তের অভিযোগ, ‘‘সকালে জরুরি বিভাগে উৎপলকে নিয়ে আসা হলে তাকে ভর্তি নিতে গড়িমসি শুরু হয়। পুজোর ছুটিতে চিকিৎসক নেই বলে ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা হয়।’’ ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রদীপ ধর অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, যে এলাকা থেকে ছাত্রটি জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিল, সেখানে ডেঙ্গিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট না আসায় উপযুক্ত চিকিৎসা শুরুর আগেই ছাত্রটির মৃত্যু হয়। তবে এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আরও তৎপর হওয়া উঠিত ছিল বলে মনে করেন তিনি।
ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে বাইরে থেকে গ্রামে ফিরেছেন দু’জন। তাছা়ড়াও গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সোমবার গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া এলাকাতে গেল স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিশেষ দল। সামিল ছিলেন উত্তরদিনাজপুরের উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস মণ্ডল, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক খুরসেদ জাহান, বিডিও রাজু শেরপা। পরে সেখানে পৌঁছান মহকুমা শাসক সেরিং ওয়াই ভুটিয়াও। ৯ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে তা এলাইজা টেস্টের জন্য পাঠান তাঁরা। খুরসেদ জাহান বলেন, ‘পরীক্ষার রিপোর্ট এলেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’
ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে মুদাসেন আব্বাস ও কলকাতায় পাঠরতা ছাত্রী ফারহাত বেগম জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তাদের শরীরে ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল। এছাড়াও এলাকার অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃণাল মণ্ডল নামে এক জন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যােল চিকিত্সাধীন থাকলেও বেশির ভাগই বিহারের কিসানগঞ্জের বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিত্সা করান। গোয়ালপোখরের বিডিও রাজু শেরপা বলেন, ‘‘যারা ডেঙ্গি বলে জানাচ্ছেন তাদের কেউই মূল পরীক্ষা করেননি। সেই কারণে এ দিন এঁদের এলাইজা পরীক্ষা করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy