উদ্ধার: মহানন্দা ক্যানালে পড়ে যাওয়া পুলকারটি উদ্ধার করা হচ্ছে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
বেসরকারি এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পুলকার ছাত্রছাত্রী সমেত মহানন্দা ক্যানালের জলে পড়ে যায়। শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া থানায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু স্থানীয় কয়েক জন যুবকের তৎপরতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। তাঁরাই উদ্ধার করে আনেন আটকে পড়া পড়ুয়াদের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ওই যুবকরা কাছাকাছি থাকায় রক্ষে হয়েছে। গাড়ি পড়তে দেখেই তাঁরা ছ’-সাত জন জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সাতসকালে ক্যানালের লকগেট খোলা থাকায় জলে বেশ স্রোত ছিল। গাড়ির মধ্যে আটকে থাকা ১১ জন ছাত্রছাত্রীকে ওই বাসিন্দারই উদ্ধার করেন। চালককেও টেনে তোলা হয়।
পুলিশ এবং গ্রামবাসীরা জানান, ঘটনাটি নজর এড়িয়ে গেলে বা মিনিট ১০-১৫ দেরি হলে বড় ঘটনা ঘটতে পারত। প্রতিটি ছাত্রছাত্রীই সুস্থ আছে। জলে পড়ে কিছুক্ষণের জন্য ডুবে যাওয়ায় বাচ্চার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।
আধঘণ্টার মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ এবং এসএসবি-র জওয়ানেরা ঘটনাস্থলে আসেন। লকগেট বন্ধ করে ক্যানালের জল কমিয়ে আর এক দফায় তল্লাশি করে গাড়িটিকে তোলা হয়। স্কুল এবং অভিভাবকদের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করে গাড়িতে আর কোনও ছাত্রছাত্রী ছিল কি না, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। উদ্ধার কাজ চলার ফাঁকে পুলকারের চালক পালিয়ে যান। বিধানগরের বাসিন্দা, ওই চালকের খোঁজ শুরু হয়েছে।
দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের তৎপরতায় বাচ্চারা রক্ষা পেয়েছে। গাড়িটির কোনও যান্ত্রিক সমস্যা হয়েছিল না, চালকের ভুল তা দেখা হচ্ছে।’’
শিলিগুড়ি থেকে ফুলবাড়ি মোড় হয়ে গোয়াটুলি যাওয়ার রাস্তার ডানপাশে মহানন্দা ক্যানাল। যার অন্য পাড়ে আর একটি সার্ভিস রোড রয়েছে। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের খলিলজোত, রহমুজোত, কালাচাঁদজোতের বাসিন্দারা ওই রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করেন। মূল ক্যানাল গেটের পাশের সেতুর সঙ্গে রাস্তাটি এসে জুড়ে গিয়েছে। ওই রাস্তার দিকের গ্রাম থেকে পরপর ১১টি বাচ্চাকে তুলে পুলকারটি ব্যারেজের দিকে আসছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, কোনও কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। গাড়িটি রাস্তার ধার নিয়ে ক্যানালের মধ্যে গিয়ে পড়ে। আর এক দল বাসিন্দা দাবি করেন, চালক মোবাইলে কথা বলছিল। যদিও উদ্ধার হওয়া শিশুরা মোবাইলে কথা বলার বিষয়টি জানায়নি।
উদ্ধার হওয়া ১১ জনের মধ্যে ৩ জন মেয়ে। এরা কেজি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলটি শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সড়কের ব্যাটেলিয়ান মোড় এলাকার। অভিভাববকেরা জানান, দুই বছর আগে এলাকার বড় রাস্তায় স্কুল বাস আসত।
কিন্তু গ্রামে গ্রামে বাড়ি থেকে ছেলেমেয়েদের তোলার জন্য ছোট গাড়িটি চালু হয়। স্কুলের প্রিন্সিপাল শ্রেয়া মিত্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রতিটি শিশুই ভাল রয়েছে। অভিভাবকদের দাবি মেনেই ছোট গাড়িটি রাখা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ভাবা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy