জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে তাণ্ডব চালাল দু’টি বাইসন৷ রবিবার সকালে ময়নাগুড়ির রামসাইতে এই ঘটনায় বন দফতরের এক বিট অফিসার সহ দু’জন জখম হয়েছেন৷ বনকর্মীরা ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে বাইসন দু’টিকে কাবু করার চেষ্টা চালায়৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুটি বাইসনেরই মৃত্যু হয়৷
এ দিন সকলে গরুমারার জঙ্গল থেকে বাইসন দু’টি বের হয়৷ এর মধ্যে একটি বাইসন ঢোকে রামসাইয়ের উত্তর কালামাটিতে৷ অপরটি খেমনেরহাট গ্রামে৷ উত্তর কালামাটি এলাকার বাসিন্দা মলীন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে প্রথম হানা দেয় বাইসনটি৷ বাড়ির বেড়া ও একটি গাড়ির ক্ষতি করে বাইসনটি৷ মলীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘আতঙ্কে বাড়ির সবাই অনেকক্ষণ ঘরে লুকিয়ে ছিলাম৷’’ ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইসনটি এলাকায় তাণ্ডব চালাতে থাকে৷ সেই সময় বাবলু রায় নামে এক গ্রামবাসী জখম হন৷ বাইসনের তাণ্ডবে এলাকায় আরও কয়েকটি বাড়ির বেড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷
উত্তর কালমাটী গ্রামে যখন এই তাণ্ডব চলছে, তখন কাছেই খেমনের হাটে তাণ্ডব চালাচ্ছে আরেকটি বাইসন৷ কখনও বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে বাইসনটি ঢুকে পড়ছে, তো কখনও তাকে দেখতে ভিড় করা জনতার দিকে ছুটছে৷ ততক্ষণে অবশ্য দু’টি এলাকাতেই পৌঁছে গিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা৷ বনকর্মীরা বাইসনটিকে কাবু করার চেষ্টা চালালে খেমনেরহাটে বাইসনটি পাল্টা বনকর্মীদের দিকে ছুটে যায়৷ সেই সময় জখম হন সেখানে থাকা বিছাভাঙার বিট অফিসার প্রবীর কুমার সরকার৷ তাঁকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷
এরপর দুই এলাকাতেই বাইসন দু’টিকে লক্ষ করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বনকর্মীরা৷ উত্তর কালামাটি গ্রামে বাইসনকে ঘুম পাড়ানি গুলি ছোড়ার পর সেটি সেটি চলতে চলতে চা বাগানের নালায় পড়ে যায়৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে তার মৃত্যু হয়৷ অপরদিকে খেমনের হাট এলাকায় বাইসনটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার পর সেটি হাটতে হাটতে গিয়ে তিস্তার বা হাতি খালে পড়ে যায়৷ খালে খানিকটা জলও রয়েছে৷ সেখানেই বাইসনটির মৃত্যু হয়৷
জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘বাইসন দু’টির ময়না তদন্ত হবে৷’’
রবিবার বিকেলেও ফের বাইসনের হামলায় জখম হলেন এক ব্যাক্তি৷ জানা গেছে, রামসাইয়ের জঙ্গলে অনিল রায় নামে ওই ব্যক্তি গরু বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাইসনের হাতে আক্রান্ত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।