Advertisement
০৪ মে ২০২৪
অগ্নিগর্ভ কালিয়াচক

বেপাত্তা বকুল, ছাত্র খুনে ধৃত আট

কালিয়াচকের নওদাযদুপুরে স্কুল ছাত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের ঘটনায় পাঁচ মহিলা-সহ আটজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে এখনও অধরা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এলাকার ত্রাস বকুল শেখ।

আতঙ্কের রেশ কাটেনি। ঘটনার পরে এখনও সুনসান কালিয়াচকের রাস্তা। — মনোজ মুখোপাধ্যায়

আতঙ্কের রেশ কাটেনি। ঘটনার পরে এখনও সুনসান কালিয়াচকের রাস্তা। — মনোজ মুখোপাধ্যায়

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

কালিয়াচকের নওদাযদুপুরে স্কুল ছাত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের ঘটনায় পাঁচ মহিলা-সহ আটজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে এখনও অধরা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এলাকার ত্রাস বকুল শেখ।

পুলিশ জানিয়েছে, বকুল শেখের খোঁজ পেতে তাঁরই পরিবারের তিন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত হাবিবা খাতুন, রুবিনুর বিবি এবং মিনা বেওয়াকে জেরা করে বকুলের সন্ধান মিলতে পারে বলে আশাবাদী পুলিশ।

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নওদা যদুপুরের ঘটনায় দু’টি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। এক কিশোরকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় আমরা আটজনকে গ্রেফতার করেছি। তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে মুল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রামে লাগাতার তল্লাশি চলছে।’’

সোমবার বিকেলে কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের ভাগলপুরের বাসিন্দা ইব্রাহিম মোমিনের স্কুল পড়ুয়া ছেলে সাবির মোমিনকে গ্রাম থেকেই বকুল শেখ ও তার দলবল তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। গভীর রাতে বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে একটি আম বাগান থেকে উদ্ধার হয় সাবির মোমিনের মৃতদেহ। তাকে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইব্রাহিম বকুল শেখের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা জাকির শেখের ছায়াসঙ্গী। ছেলের দেহ মেলার পর থেকেই বেপাত্তা ইব্রাহিম। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ ডিসেম্বর নওদা যদুপুরে বকুল ও জাকির শেখের অনুগামীদের মধ্যে গুলি, বোমা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছিল। গুলিবিদ্ধ হয়েছিল বকুল শেখের স্কুল পড়ুয়া ছেলে মহম্মদ আজিম আলম। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল ইব্রাহিম। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওইদিনের ঘটনার বদলা নিতেই ইব্রাহিমের ছেলে সাবিরকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে।

ছাত্র মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। পুলিশের উপরে হামলাও চালানো হয়। তাই খুন ছাড়াও সরকারি কাজে বাধা সহ একাধিক ধারায় পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সাবির মোমিনের মা আজেদা বিবি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ মহিলা সহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, গুরুতর আঘাত সহ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পুলিশ ধৃত আটজনকে দশ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করে। বিচারক তিন যুবককে তিনদিনের পুলিশ হেফাজত এবং পাঁচ মহিলাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।’’

এ দিকে মঙ্গলবার কালিয়াচকের পর এ দিন ফের মালদহে আক্রান্ত হল পুলিশ। তল্লাশির নামে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ি ঘেরাও গ্রামবাসীরা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। পরে মালদহ থেকে বাড়তি পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভ তুলে দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জের বালুটোলা গ্রামের বাসিন্দা আফাজুল মিঞার অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে হানা দেয় গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ। তল্লাশির নামে পুরো বাড়ি তছনছ করে দেওয়া হয়। আফাজুলের স্ত্রী নাসেমা বিবি এবং স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ফতেমা খাতুনকে মারধর করে পুলিশ। গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির বাড়িতে অস্ত্র রয়েছে বলে অভিযান চালানো হয়। যদিও পুলিশের দাবি মানতে নারাজ আফজাল মিঞা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Student Police arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE