জেলা সদর হাসপাতালের ইন্ডোরে শিশু বিভাগে এখনও একই শয্যায় একাধিক শিশু ও মা।
জ্বর, শ্বাসকষ্ট আর নিউমোনিয়ার সংক্রমণ নিয়ে এক শিশুর মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। শনিবার রাতে শিশুটি মারা যায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির নাম সোনিয়া পরভিন (১ মাস ৪ দিন)। বাড়ি জলপাইগুড়ির বোধাগঞ্জের নাকুগছে। হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘সিভিয়ার নিউমোনিয়ায় মারা গিয়েছে শিশুটি। সঙ্গে এনসেফেলাইটিসও ছিল।’’ গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। তার অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ ছিল কি না, জানা যায়নি। নমুনা সংগ্রহ করা হলেও ঠিক মতো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর আগে গত ১ মার্চ চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা এক প্রসূতির ১৯ দিনের শিশু সিভিয়ার রেসপিরেটরি ফেলিওর নিয়ে মারা গিয়েছিল। এ দিকে, অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে নিশ্চিত হতে এখনও পযন্ত কোনও নমুনা পরীক্ষাই সফল ভাবে করে ওঠা যায়নি বলে সূত্রের খবর। কুড়িটি নমুনা পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলেও সঠিক ভাবে পরীক্ষা করা যায়নি বলে হাসপাতালের একটি সূত্রের দাবি। সুপার জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগে কী হয়েছে, তাঁর এখনও জানা নেই।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বৃহস্পতিবার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস (এআরআই) নিয়ে ১৫টি শিশু ভর্তি ছিল। শুক্রবার দুপুরের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু সুস্থ হয়ে ওঠায় তাদের ছুটি দেওয়া হয়। বাকি চার জন ভর্তি ছিল। তার মধ্যে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ভেন্টিলেটরে থাকা শিশুটি মারা যায়। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি কেন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। জনস্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নেব। শিশুটির মৃত্যু নিয়ে রিপোর্ট এখনও পাইনি।’’ একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, হাসপাতালে ভর্তি এআরআই রোগীদের তড়িঘড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়েও।
অন্য দিকে, এআরআই আক্রান্ত শিশুদের ভিড় খানিকটা হলেও কমছে বলে দাবি জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ দিন দুপুর পর্যন্ত ১০৫টি শিশু ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। নতুন করে ১৪টি শিশুকে এ দিন ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। দুপুর পর্যন্ত ভর্তি থাকা শিশুদের মধ্যে ৩৮টি শিশু এআরআই সংক্রমণে আক্রান্ত বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে আটটি শিশুকে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচটি শিশুকে এখানে ‘রেফার’ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল কল্যাণ খান বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এই হাসপাতাল থেকে দুই শিশুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হয়েছে এ দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy