দিন কয়েক পরেই স্বাধীনতা দিবস। তার ঠিক আগে নাশকতামূলক কাজের আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গ জুড়ে সতর্কবার্তা জারি করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রত্যেকটি থানাকেই সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভুটান সীমান্ত লাগোয়া থানাগুলিকে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিএসএফ ও এসএসবি কর্তাদের সঙ্গেও কয়েক দফায় বৈঠক সেরেছে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশ দু’টি বিষয়ের উপরে লক্ষ্য রাখছে— প্রথমত, সম্প্রতি নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করা জীবন সিংহ এবং তাঁর সংগঠন কেএলও কোনও নাশকতামূলক কাজ করার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, চিনের দু’জন বাসিন্দাকে উত্তরবঙ্গের দু’টি সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই ভাল যাচ্ছে না। তাই আর কোনও চিনা নাগরিক বেআইনি ভাবে ঘোরাফেরা করছেন কি না, সে দিকেও নজর রাখছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “নির্দিষ্ট হুমকি নেই। তার পরেও সমস্ত থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। বিএসএফের সঙ্গে মিটিং করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”
উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। যার একটি অংশে কাঁটাতার নেই। সেই পথে যাতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার ঘেঁষে অসম সীমানা। পুলিশের ধারণা, অসমে এখনও কেএলও-র লোক রয়েছে। অভিযোগ, মায়ানমারের জঙ্গল থেকে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করছেন জীবন। এই পথেও যাতে জঙ্গি দল উত্তরবঙ্গে ঢুকতে না-পারে, সে দিকেও নজর রয়েছে।
মঙ্গলবার অসম সীমানা পরিদর্শন করেন কোচবিহারের এসপি। অসম ও মিজোরাম পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের পরেই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অসমের সীমানায় সতর্কতা জারি হয়। একই সঙ্গে এনজেপি স্টেশন, তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস, বাগডোগরা বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বেড়েছে। কড়াকড়ি বেড়েছে শিলিগুড়ি-সহ সব সদর শহরেই। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা সব থানাকে নজরদারি বাড়াতে বলেছেন। সক্রিয় স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ ও গোয়েন্দা শাখাও।
মালদহে উন্মুক্ত সীমান্ত নিয়েই চিন্তায় বিএসএফ ও গোয়েন্দা বিভাগ। স্পিডবোটে নজরদারি চলছে, দাবি বিএসএফের। সতর্ক করা হয়েছে সীমান্ত থানাগুলিকে। মালদহ টাউন স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “সর্বত্রই নজরদারি চালানো হচ্ছে।”
সহ-প্রতিবেদন: নমিতেশ ঘোষ, কৌশিক চৌধুরী, অভিজিৎ সাহা