বাবা-মা ফসল কাটার কাজ করছিলেন। চোখে চোখে রাখার জন্য নাবালক দুই সন্তানকে নিয়ে গিয়েছিলেন সঙ্গে। কিন্তু কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে খেয়াল করেন পাঁচ বছরের মেয়ে নেই! গোটা গ্রাম তোলপাড় করেও তাকে পাননি শিশুটির বাবা মনোজ মণ্ডল। নিখোঁজের পাঁচ দিন পরে সেই মেয়েকে পাওয়া গেল জলাশয় থেকে। মঙ্গলবার এ নিয়ে হুলস্থুল মালদহের মোথাবাড়ি থানা এলাকায়। পুলিশের কাছে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ করেছেন কন্যাহারা কৃষক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মোথাবাড়ি থানার উত্তর লক্ষ্ণীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লীলারামটোলার বাসিন্দা মনোজ। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার ওই কৃষকের। গত শুক্রবার বাড়ি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে জমিতে ফসল কাটার কাজ করতে গিয়েছিলেন মনোজ ও তাঁর স্ত্রী। নাবালক দুই সন্তানকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারা মাঠের ধারে খেলছিল। বাবা-মা কাজ করছিলেন। মনোজ জানান, বিকেল ৪টে নাগাদ ছেলের সঙ্গে পাঁচ বছরের মেয়ে ঋষিকা মণ্ডল বাড়ির দিকে যায়। খানিক পরে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বাড়ি গিয়ে দেখেন, ছেলে রয়েছে। কিন্তু মেয়ে নেই!
খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মেয়ের। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়েছেন। সমস্ত জায়গা তন্নতন্ন করে দেখেছেন। মেয়ের নাম ধরে জোরে জোরে ডেকেছেন। কোথাও পাননি ঋষিকাকে। শেষে মোথাবাড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। কিন্তু পুলিশও মেয়েটিকে পায়নি। তাদের সন্দেহ হয় নাবালিকাকে কেউ চুরি করেছে। গোটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তারা। পুলিশকুকুর নিয়ে তল্লাশি হয়। তাতেও হদিস মেলেনি মেয়েটির। মঙ্গলবার হঠাৎ গ্রামের একটি জলাশয়ে নিখোঁজ ঋষিকার দেহ ভাসতে দেখে শোরগোল ফেলে দেন গ্রামবাসীরা। দৌড়ে যান শিশুটির বাবা-মা। তাঁদের কান্না, হাহাকারের মধ্যে উপস্থিত হয় পুলিশ। ঋষিকার দেহ উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। কী ভাবে মেয়েটির মৃত্যু হল, খুন না দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
পরিবারের তরফে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এমন ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবে চাঞ্চল্য গ্রামে। মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত হচ্ছে।’’