E-Paper

হাতি-আতঙ্কে শিকেয় পড়া, থমথমে গ্রাম

জঙ্গলের সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে পরীক্ষার্থীদের বাসে চাপিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে গেল বন দফতর। যে ক’দিন পরীক্ষা চলবে, পরীক্ষার্থীদের বন দফতরের বাসে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা থাকবে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৭
Forest

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মহারাজঘাটের জঙ্গলের প্রবেশপথ। নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় পরীক্ষার্থীকে পিষে মেরেছিল দাঁতাল হাতি। সেই রাস্তা বন্ধ করে দিল বন দফতর। শুধু সেই পথই নয়, এলাকার সব জঙ্গলপথ গার্ডরেল বসিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শুক্রবার সকালে। কারণ, জঙ্গলের সেই পথের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে হাতি। তাই জঙ্গলের সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে পরীক্ষার্থীদের বাসে চাপিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে গেল বন দফতর। যে ক’দিন পরীক্ষা চলবে, পরীক্ষার্থীদের বন দফতরের বাসে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা থাকবে।

গ্রামের চার পাশে হাতি ঘোরাফেরা করায় আতঙ্কে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা শিকেয় ওঠার জোগাড়। এক পরীক্ষার্থীর বাবা অমল দাস বলেন, “একে তো সহপাঠীর মৃত্যুর শোক, তার পরে বিকেলের পর থেকে হাতির আতঙ্ক। ছেলেমেয়েগুলো পড়তেই পারছে না।”

এ দিকে, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন সকালে মৃতের বাড়িতে যান তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাস। রাস্তা বন্ধ করা নিয়ে তাঁর কাছে ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা। যদিও বৈকুণ্ঠপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক হরিকৃষ্ণণ জানান, জরুরি কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

হাতিগুলির গতিবিধি কী, তা নিয়েই আশঙ্কা বাসিন্দাদের। বিশেষ করে যে হাতিটি পরীক্ষার্থীকে পিষে মেরেছে, তার দাপিয়ে বেড়ানো দেখে ভয়ে সন্ধ্যার পরে বাড়িতে ঢুকে পড়ছেন বাসিন্দারা। বন দফতরের দাবি, যে তিনটে বুনো হাতি এলাকায় রয়েছে, সেগুলি দলছুট। তারা নিজেরাই এলাকা ছেড়ে যেতে চাইছে। বনকর্মীরা সেই পথ দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দাবি। যদিও শুক্রবার সাতসকালে মহারাজঘাট এলাকায় ফের সেই দাঁতাল হাতিটি বেরিয়ে আসে। পটকা ফাটিয়ে তাকে তাড়ানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। পরে শূন্যে গুলি ছুড়ে লোকালয় থেকে সরানো হয়।

হাতির আতঙ্কে এলাকা শুক্রবারও ছিল থমথমে। মৃত পরীক্ষার্থীর বাবা বিষ্ণু দাস সারা দিন চুপ করে বসে ছিলেন। মা সুমিত্রা দাস মাঝে মাঝেই ছেলের নাম ধরে ডুকরে উঠেছেন।

বাসে চেপে মাধ্যমিক দিতে যাওয়া এক পরীক্ষার্থী এ দিন বলে, “অনেক সকাল সকাল বার হতে হচ্ছে। তাতে সকালের পড়ার সমস্যা হচ্ছে।’’ আরেক পরীক্ষার্থীর কথায়, “বাসে চাপিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এলাকা থেকে হাতি সরানো গেলে আরও ভাল হত। স্বাধীন ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে পারতাম। গতকাল আতঙ্কে পড়তেই পারিনি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

elephant attack Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy