সিঙিমারিতে পরিদর্শন। —নিজস্ব চিত্র।
সিঙিমারি নদীর ওপর সেতু তৈরির কাজের আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসনের কর্তারা। রবিবার দিনহাটার গোসানিমারি এলাকায় সাগরদিঘি ঘাটে দিনহাটা-সিতাই সরাসরি সড়ক যোগাযোগে নির্মীয়মাণ ওই সেতুর কাজের অগ্রগতি ঘুরে দেখতে যান কোচবিহারের জেলাশাসক ও নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
নির্মীয়মাণ সেতুর কাজ সরোজমিনে ঘুরে দেখার পর পূর্ত, ভূমি সংস্কার দফতরের পাশাপাশি প্রশাসনের আধিকারিক ও নির্মাণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ওই সেতু তৈরির কাজের সূচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। চার বছরের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সেতুর মাত্র ৩০০ মিটারের নির্মাণ কাজ এখনও পর্যন্ত শেষ হয়েছে। সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য জমি কেনার প্রক্রিয়াও ঢিমেতালে চলছে।
সব মিলিয়েই ক্ষোভের কথা জানিয়েদেন জেলাশাসক ও বিধায়ক। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “সামগ্রিকভাবে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। জমি অধিগ্রহণ সহ যাবতীয় খামতি মিটিয়ে ২০১৬ সালের মধ্যে নির্মাণ সম্পূর্ণ করা যাবে বলে আশাকরছি। মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে ওই কাজে নজরদারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “২০১২ সালে কাজ শুরুর সময় যতটা গতি ছিল পরের বছরের অগ্রগতি তেমন হয়নি। দ্রুত সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য জমি কেনার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পূর্ত দফতরের কর্তাদের বলা হয়েছে। নির্মাণকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকেও সময় নষ্ট না করতে বলা হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজ্যে সরকার বদলের পর উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম ৯৯০ মিটার দীর্ঘ ওই সেতুর জন্য ১০৫ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। পূর্ত দফতর ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে রয়েছে। সেতুটি তৈরি হলে দিনহাটা ও সিতাইয়ের বাসিন্দাদের ঘুরপথে যেখানে সড়ক যোগাযোগে ১০০ কিমি দূরত্ব পেরোতে হয়, তা কমে ২০ কিমিতে দাঁড়াবে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার দেড় বছর বাকী থাকলেও এখনও পর্যন্ত তিনভাগ কাজই সম্পূর্ণ হয়নি বলে অভিযোগ। পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, প্রায় এক কিমি দীর্ঘ ওই সেতুতে ২১টি স্তম্ভ বসাতে হবে। তারমধ্যে ১৫টি স্তম্ভের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। স্তম্ভের ওপরের অংশে কাজ হয়েছে বড়জোর ৩০০ মিটার। এ বছর আগেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কাজ চালাতে সমস্যা বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর আগে সেতুর কাজে গতি বাড়ান সম্ভব হবেনা বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তারওপর সংযোগকারী রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণের ব্যাপার রয়েছে। তাই ২০১৬ সালের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে কিনা সেব্যাপারে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। পূর্ত দফতর(সড়ক) দফতরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুজন কাঞ্জিলাল অবশ্য বলেন, “ ওই সেতু সংক্রান্ত ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করবনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy