Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
NRC

ভোটের আগে পাট্টা, কমছে পঞ্জি আতঙ্ক

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৪টি উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চলতি বছরেই আলিপুরদুয়ার জেলার উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির পাট্টা দিতে মরিয়া প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ারে ২৯টি উদ্বাস্তু কলোনিতে সমীক্ষার কাজ চলছে। পুজোর মধ্যেই কাজ শেষ করে বাসিন্দাদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দিতে চান প্রশাসনের কর্তারা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৪টি উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। যে কলোনিগুলির প্রত্যেকটিতে গড়ে একশো বা তার বেশি পরিবারের বসবাস। সূত্রের খবর, এর মধ্যে ২৩টি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দারা আগেই জমির পাট্টা পেয়ে গিয়েছিলেন। গত বছর আলিপুরদুয়ার শহরের একটি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের হাতেও জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। এ বার বাকি ৪০টি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদেরও জমির পাট্টা দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে বাকি থাকা এই ৪০টি উদ্বাস্তু কলোনির মধ্যে ১১টিতে সমীক্ষার কাজ করা হয়। যার মধ্যে চারটি কলোনিতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাকি সাতটি কলোনিতে সমীক্ষার কাজ শেষ। দ্রুতই এই সাতটি কলোনির বাসিন্দাদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। এর পাশাপাশি আরও ২৯টি উদ্বাস্তু কলোনিতে সমীক্ষার কাজ চলছে। আলিপুরদুয়ার জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দীপঙ্কর পিপলাই বলেন, ‘‘চলতি বছর পুজোর মধ্যেই জেলার সব ক’টি উদ্বাস্তু কলোনিতে সমীক্ষার কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, আগে সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার পর পাট্টা বিতরণের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখন আর তার প্রয়োজন নেই। ফলে সমীক্ষার কাজ শেষ হলে পাট্টা পেতে খুব বেশি অপেক্ষাও করতে হবে না বাসিন্দাদের।

অসমে এনআরসি চালুর পর সীমানা পেরিয়ে আলিপুরদুয়ারেও সেই আতঙ্ক চরম আকার নিয়েছিল। জমির পাট্টা না থাকায় জেলার বিভিন্ন উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের মনে সেই আতঙ্ক আরও বেশি করে থাবা বসিয়েছিল। তবে জেলা প্রশাসনের অন্দরে ইতিমধ্যেই এই উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের মধ্যে জমির পাট্টা বিলি নিয়ে তৎপরতা শুরু হওয়ায় উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দারা বেশ খুশিই।

তবে প্রশাসনের এই তৎপরতা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনীতির রঙও লাগতে শুরু করেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের অবিলম্বে জমির পাট্টা দেওয়া হোক তা নিয়ে আমরাও বারবার দাবি তুলেছি। তৃণমূল সরকার যা এতদিন ঝুলিয়ে রেখেছিল। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় ফলের পুনরাবৃত্তি যাতে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে না হয় সেজন্য উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের পাট্টা দেওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে তৃণমূল সরকার। তাতে কোনও লাভ হবে না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর পাল্টা, আমরা কোনও উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে নির্বাচনকে মেলাই না। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বর্তমান রাজ্য সরকার যে উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে তৎপর হয়েছে তাও জেলার মানুষ জানেন। ফলে বিজেপির বিভ্রান্তিকর প্রচার কোনও কাজে আসবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Land Lease Assembly Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE