উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনার দাবি বিজেপি বিধায়কদের দীর্ঘদিনের। মাসদু’য়েক আগে নয়াদিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কয়েক জনকে চিঠি দিয়ে নানা কাজের দাবি তুলেছিলেন উত্তরবঙ্গের কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক। অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে জানানো দাবির কোনও কিছু এখনও পূরণ করা হয়নি। মঙ্গলবার রাজ্যভাগের দাবিতে ফের সরব হয়েছেন বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ। নয়াদিল্লিতে জানানো দাবির কোনও সুরাহা না হওয়ার জন্যই কি ফের রাজ্যভাগের দাবিতে সরব হতে হচ্ছে উত্তরে দলের বিধায়কদের? এমনই প্রশ্ন উঠছে বিজেপির অন্দরে।
তবে শঙ্করের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে সরাসরি চিঠির মাধ্যমে জানানো দাবির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগেই সে সব দাবির কিছু পূরণ করা হতে পারে বলে আমরা আশাবাদী।’’
বিজেপি বিধায়কদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার কিছু কাজ করতে চাইলে এ রাজ্যের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই সাহায্য করা হচ্ছে না। দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা বুধবার এমনই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের অসহযোগিতার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু কাজ থমকে রয়েছে। তার পরেও কেন্দ্রের তরফে সরাসরি যে কাজগুলি করা যায়, সে সবের অনেকটাই করা হচ্ছে।’’ বিজেপির অভিযোগ, জমি না দেওয়ার কারণে ভারত-বাংলাদেশের কিছু ফাঁকা সীমান্তে কাঁটাতার তৈরির কাজ থমকে। রেলের ওভারব্রিজের কিছু কাজও করা যাচ্ছে না।
দলীয় সূত্রে খবর, বিজেপি বিধায়কদের নয়াদিল্লিতে জানানো দাবিগুলির অন্যতম হল— উত্তরবঙ্গে এমস তৈরি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আরও কয়েকটি দাবিও ছিল তাঁদের। বিজেপির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার সে সবের বিষয়ে ভাবছে।
আগামী বছরে বিধানসভা ভোটের আগে সে সব কাজ না হলে তার দায় বিজেপির উপরে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। সেই দায় আগেভাগে রাজ্যের ঘাড়ে চাপাতেই কি বঞ্চনার অভিযোগে রাজ্যভাগের দাবি? বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণের বক্তব্য, ‘‘মাসদু’য়েক আগে জানানো দাবি পূরণ এত দ্রুত আশা করা ঠিক নয়। রাজ্যের কাজ বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকে। আমরা আশাবাদী, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানানো কিছু কাজ করা হবে।’’
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে মানুষ নেই। সে জন্যেই বঞ্চনার দাবি। নয়াদিল্লিতে কাজের দাবি জানিয়েও তো বিজেপি বিধায়কেরা কিছুই করতে পারলেন না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)