প্রতীকী ছবি।
তিস্তা নদীর পাড়ে সামরিক বিমান ঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে ভারতীয় সেনা। বাগরাকোট-ওদলাবাড়ির মাঝে সাওগাঁও চা বাগান লাগোয়া তিস্তাপাড়ে এ জন্য প্রায় সাড়ে তিনশো একর জমি চেয়েছে সেনা।
বছরদুয়েক আগেই এই লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছে জমি চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল সেনাবাহিনী। রাজ্য সরকারের সূত্রের দাবি, জমিটি সেনার হাতে তুলে দিতে প্রাথমিক ভাবে নীতিগত কোনও আপত্তি নেই তাদের। প্রস্তাবিত ওই জমির সমীক্ষাও হয়েছে রাজ্য ও সেনার তরফে। আপাতত জমিটির মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “সেনাবাহিনী একটি এয়ার বেস করার জন্য জমি চেয়েছে। সেই মতো আমরা সমীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি।”
অবস্থানের দিক থেকে ওই এলাকাটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকা থেকে চিন সীমান্ত কাছেই। চিনের দিকে নজর রেখেই এই এলাকার পাশ দিয়ে সড়ক তৈরি এবং রেলপথ বসানোর কাজ চলছে। ‘চিকেন নেক’ বলে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে সেনা বরাবরই চিন্তিত। কোনও কারণে শিলিগুড়ি করিডরে সমস্যা তৈরি হলে বিকল্প বিমানঘাঁটি হিসেবে এই ‘কম্পোজিট অ্যাভিয়েশন বেস’ তথা সামরিক বিমান ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে দাবি। কালিম্পং থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৬২ কিলোমিটার। ভুটান, গ্যাংটকের সঙ্গেও যোগাযোগের সুবিধে রয়েছে এখান থেকে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত ঘাঁটিতে একাধিক বিমান রাখার পরিকাঠামো থাকবে। থাকবে একাধিক রানওয়ে। অন্তত তিনটি বিমান একই সময়ে ওঠানামা করতে পারে এমন পরিকাঠামো তৈরি হবে। বেশ কয়েকটি বিমানকে যাতে সুরক্ষিত ভাবে সেখানে রাখা যায়, তার জন্য হ্যাঙার তৈরি হবে। কয়েকটি হেলিকপ্টার রাখার ব্যবস্থা থাকবে।
একটি কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, সেনাবাহিনী বহু মালপত্র, অস্ত্র, ছোট ছোট বিমানে আনা-নেওয়া করে। সেই সব বিমান তিস্তা নদীর পাড়ে নতুন ঘাঁটিতে ওঠা-নামা করতে পারবে। নতুন করে একটি বড় সেনা ছাউনিও তৈরি হবে এই বিমানঘাঁটিতে। মোট ৩৫৩ একর জমি চাওয়া হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণে জমিতে বড় বিমানঘাঁটি গড়ে তোলা সম্ভব। আর সেটাই যদি হয়, তা হলে সেই বিমানঘাঁটি হবে বাগডোগরার থেকে অনেক বড়।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন এবং সেনার তরফে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রস্তাবিত জমিটি পুরোপুরি খালি নয়। সেখানে প্রায় ২৫টি পরিবার রয়েছে। তবে সেই বাড়িগুলি সবই জমির এক পাশে। যদিও সমীক্ষা রিপোর্টে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। সেই পরিবারগুলি ছাড়া জমিতে আর কোনও বাধা নেই।
একটি সূত্রের দাবি, জমির কিছু অংশে ইতিমধ্যেই বফর্স কামান এনে রেখেছে সেনা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy