মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এর আগেও সে কথা বলেছেন। সোমবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কর্মিসভায় ফের একই বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘‘কেউ দলের চেয়ে বড় নয়। শৃঙ্খলা না মানলে রাস্তা খোলা রয়েছে। অন্য দলে চলে যান। আমি কর্মী তৈরি করে নেব।’’
দলনেত্রীর সেই বার্তা কি আদৌও শুনছেন জেলা নেতৃত্ব?
তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, গত মাসে পতিরামে দলীয় সভায় প্রায় একই সুরে জেলার নেতাদের ‘সতর্ক’ করেছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তার পরেও জেলা নেতাদের একাংশ নিজেদের ‘দলের চেয়ে বড়’ বলে কর্মীদের সামনে তুলে ধরছেন। তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েই কয়েক জন নেতা নিজেদের ‘বড়’ ভাবতে শুরু করেছেন। বিলাসবহুল গাড়ি, নিরাপত্তারক্ষী, ‘পারিষদ’ নিয়ে ঘুরছেন তাঁরা।
তাঁদের অভিযোগ, ওই নেতারা বুথস্তরের নেতাদের সঙ্গে মিশছেন না। সব সময় ‘পারিষদেরা’ ঘিরে থাকায় সাধারণ কর্মীরা তাঁদের নাগাল পাচ্ছেন না। এ ভাবেই দলের শীর্ষ মহলের সঙ্গে নিচুতলার দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক নেতা বলেন, ‘‘কয়েক জন নেতার জন্য দলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দলনেত্রী বারবার হুঁশিয়ারি দিলেও তাঁরা আচার-ব্যবহার বদলাচ্ছেন না৷ ফলে দলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নিচুতলায় ক্ষোভ জমছে।’’
দলের অন্দরমহলের কানাঘুষো, এই ‘ক্ষোভ’ যে আসন্ন পুরসভা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে, তা বুঝছেন রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণেই শীর্ষনেতৃত্ব একাধিক বার জেলা স্তরের নেতাদের সাধারণ জীবনযাপনে গুরুত্ব দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হয়নি বলে দলের নেতাদের একাংশের দাবি। সেই ‘খবর’ দলনেত্রীর কানে যেতেই নির্বাচনের আগে ফের একবার ‘শৃঙ্খলার পাঠ’ দিতে তিনি এমন কথা বলেছেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে।
দলীয় সূত্রে খবর, জেলায় জেলায় দলের নেতাদের একাংশের নিজেদের ‘দলের থেকে বড়’ ভাবাই দলের ক্ষতি করছে বলে টিম পিকেরও বক্তব্য।
তবে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে, তাঁরাও দলনেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন। জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘আগের চেয়ে সংগঠন অনেক মজবুত হয়েছে। আমরাও বলেছি দলের চেয়ে ব্যক্তি বড় নয়। দলের নিয়ম যাঁরা মেনে চলবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy