পাশেই বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। এ বার তাঁর সামনে বাংলা ভাগের দাবি জানালেন কোচবিহারের তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক মালতি রাভা রায়। এর আগে আলিপুরদুয়ারে বিজেপি সাংসদ জন বার্লাও উত্তরবঙ্গকে স্বাধীন রাজ্য ঘোষণা করার দাবি তুলেছিলেন। যা নিয়ে সে সময় সরগরম হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। পরে অবশ্য বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব রুখে দাঁড়ানোয় তা ধামাচাপা পড়ে যায়। বুধবার রাজবংশী বীর সেনাপতি চিলা রায়ের জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত হয়ে আবার সেই বাংলা ভাগের দাবি উস্কে দিলেন মালতি। তা-ও আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই।
‘দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজবংশী নেতা অনন্ত মহারাজ আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে গিয়ে মালতি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি তো আমাদের রয়েছেই। এরই সঙ্গে আমাদের দাবি, বীর চিলা রায়ের কাহিনি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন চিলা সম্পর্কে কিছুই জানে না। ওঁদের জানাতে হবে যে, চিলা রায় শুধু কোচবিহার নয়, গোটা ভারতবর্ষের গর্ব।’’
গত বছর জুলাই মাসে একই দাবি তুলেছিলেন বার্লা। তখন অবশ্য রাজ্য বিভাজনের প্রস্তাব এক কথায় নাকচ করে দেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষেরা জানিয়ে দেন, এ প্রস্তাব একান্তই বার্লার নিজস্ব। দলের এতে কোনও সায় নেই। কিন্তু তার পরেও বার্লা একাধিক বার বলেছেন, স্থানীয় মানুষের দাবি মেনে উত্তরবঙ্গ বিভাজনের প্রয়োজন রয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য জুড়ে বিতর্কের আবহেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয় বার্লার। তখনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন নিশীথ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরেও বার্লাকে আগের মতোই রাজ্য ভাগাভাগি নিয়ে সুর চ়ড়াতে দেখা গিয়েছে। বরং, সংযত থেকে সুকৌশলে বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতে দেখা গিয়েছে নিশীথকে। বুধবারও নিশীথ বাংলা ভাগ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও ‘কোচবিহারবাসীর মুক্তি’র কথা তাঁর ভাষণে উঠে এসেছে।