E-Paper

দলে সৌমেন, নিরুত্তাপ পদ্ম-শিবির

সৌমেন কেনও বিজেপিতে ফিরলেন এবং বেশ কিছু দিন ধরে তিনি তৃণমূলে নিষ্ক্রিয় থাকলেও কেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তা নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

গৌর আচার্য 

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩২

Sourced by the ABP

কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়ের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ফেরার পরে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সারা দিনে তা নিয়ে উত্তর দিনাজপুরে বিজেপির অন্দরে-বাইরে তেমন উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। বরং, এ দিন রায়গঞ্জে বিজেপির জেলা কার্যালয় ও কালিয়াগঞ্জের দলের বিভিন্ন কার্যালয় কার্যত ফাঁকা ছিল।

বিজেপি সূত্রের খবর, দলের রাজ্য নেতৃত্ব জেলা নেতৃত্বের পরামর্শ ‘না নিয়ে’ সৌমেনকে দলে ফেরানোয় জেলা নেতৃত্ব ‘অস্বস্তিতে’ পড়েছেন। সৌমেন নিজেও বিজেপিতে ফেরার পরে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলা বা কালিয়াগঞ্জের বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলেই দাবি।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ফালাকাটার বাসিন্দা সৌমেনকে ‘বহিরাগত’ দাবি করে এবং স্থানীয় কাউকে দলের প্রার্থী করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপি নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ। বিজেপির এক জেলা-নেতার কথায়, ‘‘বিজেপির টিকিটে জিতে সৌমেন একদা তৃণমূলে যাওয়ায়, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার যে সব বিজেপি নেতা দলকে শক্তিশালী করেছেন, সৌমেনের দলে ফেরা তাঁরা মানতে পারছেন না।’’ এই প্রসঙ্গে বিজেপির কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার আহ্বায়ক গৌতম বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটের ফলেই সৌমেন রায়কে দলে ফেরানোর প্রভাব বোঝা যাবে।’’

সৌমেন দাবি করেছেন, তাঁর মন আগাগোড়া বিজেপিতেই ছিল। সৌমেনের একাধিক অনুগামীর দাবি, ‘‘দাদার বিজেপিতে ফেরা নিয়ে কালিয়াগঞ্জে দলের অন্দরে ক্ষোভ কিছুটা থিতু হলেই উনি বিজেপির জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন।’’ রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘সৌমেনবাবুকে দলে ফেরানো নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যা বলার বলে দিয়েছেন। বিজেপির দর্শন-মূলক রাজনীতিতে সৌমেনবাবু ফিরেছেন, এটাই আসল কথা।’’

অন্য দিকে, সূত্রের খবর অনুযায়ী, সৌমেনের বিজেপিতে যাওয়ায় বিজেপির অন্দরের ‘ক্ষোভকে’ কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল। কালিয়াগঞ্জের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘কালিয়াগঞ্জ শহরের সৌমেন-বিরোধী এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতা তথা জনপ্রতিনিধিকে তৃণমূলে ফেরার প্রস্তাব পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে, তাঁকে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী করা হবে। তিনি অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে ফিরলে শহরে বিজেপি মুছে যাবে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, সৌমেন-বিরোধী বহু বিজেপি নেতাই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। যদিও কানাইয়ার সে দাবি মানেননি বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার।

অন্য দিকে, সৌমেন কেনও বিজেপিতে ফিরলেন এবং বেশ কিছু দিন ধরে তিনি তৃণমূলে নিষ্ক্রিয় থাকলেও কেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তা নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কালিয়াগঞ্জের অসীম ঘোষ। অসীম এ দিন বলেন, ‘‘সৌমেনবাবু কালিয়াগঞ্জে তৃণমূলের হয়ে কোনও দিনই সক্রিয় ছিলেন না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy