মঞ্চে: পতিরামে বিজেপির জনসভায় দিলীপ ঘোষ। ছবি: অমিত মোহান্ত
দক্ষিণ দিনাজপুরে চাষিরা প্রচুর ধান উৎপাদন করেও কেন্দ্রের সহায়ক মূল্য পান না। ভুয়ো চাষি সেজে সব লাভ খেয়ে যায় দিদির লোকেরা। সোমবার বিকেলে বালুরঘাট ব্লকের পতিরাম হাইস্কুল মাঠে জনসভায় এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের বাধায় কেন্দ্রের কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্পে বছরে ৬ হাজার টাকা থেকেও চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর পাশাপাশি এ দিনই একই অভিযোগে মালদহ জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিকের কাছে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্মারকলিপি দেন বিজেপির কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার।
এ দিন অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ তুলে দিলীপের দাবি, ‘‘ভোটের জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার তৈরির জমি দিচ্ছে না রাজ্য। কেন্দ্রের উন্নয়নের টাকা, রেশন সব অনুপ্রবেশকারীরা নিয়ে নিচ্ছে।’’ দিলীপ আরও বলেন, ‘‘জেলাশাসকের অসহযোগিতায় বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের তহবিলের ৪ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। তিনি কারও সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেন না। রাজ্যের তিন পুলিশ আধিকারিকের মতো এই জেলাশাসককেও দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে দৌড় করানো হবে।’’
এ দিন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তণ বসুও তৃণমূলের একাধিক নেতাকে হুঁশিয়ারি দেন। গঙ্গারামপুরে প্রাতঃভ্রমণে বের হলে দিলীপের সঙ্গে শতাধিক কর্মী সমর্থক শামিল হন। গঙ্গারামপুরের শুকদেবপুরে সম্প্রতি নিহত বিজেপির কার্যকর্তা স্বাধীন রায়ের স্ত্রীর হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন দিলীপ।
এ সব অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, ‘‘উনি জানেন না, এ বছর জেলায় সরকারি শিবির থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ধান চাষিদের কাছ থেকে কেনা শুরু হয়েছে। প্রত্যেকে সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন। কাঁটাতারের ওপারে বহু ভারতীয় সমস্যায় রইলেও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেনি কেন্দ্র।’’ জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানান, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সাংসদ কোটার টাকা খরচে জটিলতা হয়েছে। কাটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে চাষি হিসেবে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন তৃণমূলের নেতা, কর্মীরাই অভিযোগ তুলে এ দিন মালদহ জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেন বিজেপির কিষাণ মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার। ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, জেলা সভাপতি দিলীপ রায়ও।
কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন নিয়ে সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল। সম্প্রতি, কৃষি আইনের বিরোধীতা করে মালদহে মিছিল ও সভা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এমন অবস্থায় চাষিদের মন পেতে আসরে নেমেছে গেরুয়া শিবির। এ দিন দুপুরে কিসান মোর্চার জেলা এবং মণ্ডল নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করেন মহাদেব। তিনি বলেন, “শিবির খোলা হলেও ধান বিক্রি করতে পারছেন না প্রকৃত চাষিরা। তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা কৃষক সেজে সরকারি শিবিরে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন নিয়ে চাষিদের ভুল বুঝিয়ে ফড়েরাজ কায়েম করতে চাইছে তৃণমূল।” তৃণমূলের মালদহ জেলা মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “ওই আইনের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন কৃষকরাই। কৃষকদের স্বার্থে যে আইন হয়নি সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy