টহলদারি: আজ, রবিবার বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তার জেরে হিলি সীমান্তে নজরদারি। নিজস্ব চিত্র
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্নে শেষ করতে ওই দেশের দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। আজ, রবিবার নির্বাচন চলাকালীন পুলিশ ও সেনাদের হাতে গ্রেফতারি এড়াতে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা পালিয়ে এ দেশে ঢুকে পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তর দিনাজপুর জেলার ন’টি থানার বিভিন্ন এলাকার সীমান্তে যাওয়ার রাস্তায় নাকাতল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। বিএসএফের তরফেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার রাতেই হেমতাবাদ থানার হাটখোলা থেকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখায় দুই বাংলাদেশি সহ তিন-জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেলার দশটি থানার মধ্যে একমাত্র ইটাহার থানা বাদে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, করণদিঘি, ডালখোলা, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর ও চাকুলিয়া থানা এলাকার মোট ২২৭ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। প্রায় দু’দশক আগে সীমান্তের সমস্ত এলাকাতেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, জেলার আটটি ব্লক মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার চাষি প্রতিদিন সকালে বিএসএফকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশের দিকে ভারতীয় ভূখণ্ডের জমিতে চাষবাস করতে যান। বিকেলে তাঁরা ফের বিএসএফকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে সীমান্তের এপারে বাড়িতে ফিরে আসেন। বিন্দোল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা মনসুর আলির দাবি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে ওই দেশের দুষ্কৃতীরা এ দেশে ঢুকে পড়তে না পারে, তার জন্য গত এক সপ্তাহ ধরে চাষিদের পরিচয়পত্রের ছবির সঙ্গে তাঁদের মুখের ছবি মিলিয়েই সীমান্তের এপারে ঢুকতে দিচ্ছে বিএসএফ।
পাশাপাশি, সীমান্ত টপকে দুষ্কৃতী অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফের জওয়ানরা দিনের বেলায় কখনও গাড়ি নিয়ে ঘুরে অথবা রুটমার্চ করে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছেন। রাতে বিএসএফের তরফে ফোকাস লাইট ও ওয়াচ টাওয়ারে উঠে শক্তিশালী দূরবিনের সাহায্য সীমান্তে কড়া নজর রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপারের দাবি, এক সপ্তাহ ধরে জেলার ৮টি থানার সীমান্তে যাওয়ার রাস্তায় ২৪ ঘণ্টা নাকাতল্লাশি শুরু করেছেন পুলিশকর্মীরা। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি জারি রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গাড়ি থামিয়েও তল্লাশি চলছে।
জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, কিছু দিন আগে কর্ণজোড়ায় জেলা পুলিশের সঙ্গে বিএসএফের কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানেই বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই আশঙ্কা নিয়ে আলোচনা হয়। দুষ্কৃতীদের অনুপ্রবেশ রুখতে এক সপ্তাহ ধরে জেলার ন’টি থানার সীমান্তে পুলিশ ও বিএসএফ একযোগে নজরদারি বাড়িয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ধৃত গোলাপ বর্মণ ও জয় রায়ের বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগঞ্জ জেলার পিরগঞ্জ থানার বালুবাড়ি এলাকায়। আর এক ধৃত প্রবান বর্মণের বাড়ি দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি থানার সিঙ্গারোল এলাকায়। ওই রাতে তিন যুবক হাটখোলায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছিল বলে পুলিশের দাবি। দুই বাংলাদেশি যুবক বেআইনি ভাবে এ দেশে ঢুকেছে বলেও দাবি পুলিশের। তারা কী উদ্দেশ্যে এ দেশে ঢুকেছিল ও প্রবানের সঙ্গে তাদের কী সম্পর্ক তা জানতে পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy