Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Abuse in Boarding School

আবাসিক স্কুলে ছাত্রীর চুল কেটে দিল সহপাঠী! দায় এড়িয়ে কর্তৃপক্ষ দোষ দিলেন নির্যাতিতাকে

অভিযোগ, ১০ বছরের মেয়েটির নির্যাতনের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তরফে সেই ছাত্রীকে চকোলেট দিয়ে ভুলিয়ে পার্লারে নিয়ে গিয়ে চুল নতুন করে কেটে দেওয়া হয়।

representational image of abuse in school

ছাত্রীকে বিষয়টি বাড়িতে জানাতেও বারণ করা হয় বলে অভিযোগ। ছবি: প্রতীকী

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৯:১৪
Share: Save:

আবাসিক স্কুলে ছাত্রীর উপর নির্যাতনের অভিযোগ সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। কেটে নেওয়া হয়েছে তাঁর চুলও। এখানেই শেষ নয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ছাত্রীটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর পরিবারকে খবর দেন। মালদহের ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে গিয়েছে। জানিয়েছে, নির্যাতিতা ছাত্রী অভিযুক্ত ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা দাবি করেছেন, প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক।

ঘটনাটি হয়েছে মালদহের ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরে একটি বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক আবাসিক স্কুলে। অভিযোগ, ১০ বছরের মেয়েটির নির্যাতনের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তরফে সেই ছাত্রীকে চকোলেট দিয়ে ভুলিয়ে পার্লারে নিয়ে গিয়ে চুল নতুন করে কেটে দেওয়া হয়। ছাত্রীকে বিষয়টি বাড়িতে জানাতেও বারণ করা হয়। কিন্তু সেই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। আতঙ্কে মাঝেমাঝে জ্ঞান হারাতে থাকে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।

সব জেনে ছাত্রীর মা-বাবা দু’জনেই স্কুলে যান। জানতে পারেন, গত কয়েক দিন ধরে তাঁদের মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে এবং নির্যাতন চালাচ্ছে স্কুলেরই এক ছাত্রী ও তার কয়েক জন সঙ্গী। মেয়েটি প্রতিবাদ করে। বাড়িতে জানানোর কথাও বলে। তখনই রাতে সেই ছাত্রীর লম্বা চুল কাঁচি দিয়ে এলোমেলো করে কেটে ছোট করে দেওয়া হয়। নিজের মেয়ের অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েন তাঁর মা-বাবা। এরপরেই তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

নির্যাতিতা ছাত্রী বাবা বলেন, ‘‘নিজে পড়াশোনা বেশি দূর করতে পারিনি। তাই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার জন্য বেসরকারি আবাসিক স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। এমন হবে তা বুঝতে পারিনি। আমি চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’’ নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘স্কুল থেকে ফোন করা হয়। কিন্তু কোনও কিছু জানানো হয়নি। মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসার পর লক্ষ্য করি মেয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। প্রশ্ন করতে জানতে পারি স্কুলে তার চুল কাটা হয়। পরে মেয়ে সব কথা জানায়। পার্লারে নিয়ে গিয়ে চুল কাটানোর কথাও বলেন।’’

স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘যে ছাত্রী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে চুল কাটার কথা স্বীকার করেছে।’’ কেন চুল কাটা হয়েছিল, তা জানাতে গিয়ে মুজিবর বলেন, ‘‘নির্যাতিতা ছাত্রী অভিযুক্ত ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। যে কারণে আক্রোশবশত এই কাজ করছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবে দায়ী নয়।’’ পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abuse school Boarding School Teacher Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE