পাঙ্খাবাড়ি রোডের ধারে চা-বাগানে পাতা তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের চা বাগানে শ্রমিকদের সঙ্গে মিলে চা-পাতা তুলছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ভাইপোর বিয়ে উপলক্ষে বুধবারই কার্শিয়াঙে এসেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তিনি যান একটি চা বাগানে। সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে মিলে চা-পাতা তোলার পাশাপাশি, কথাও বললেন তাঁদের সঙ্গে। জেনে নেন গাছ থেকে পাতা তোলার কায়দা।
ঘড়িতে দুপুর সওয়া ১টা। কার্শিয়াঙের রিসর্ট থেকে বেরিয়ে পাঙ্খাবাড়ি রোডে চা বাগানের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। চা বাগানে পৌঁছে পাহাড়ি পোশাক পরে নেন তিনি। তার পর বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে নেমে পড়েন পাতা তুলতে। চা-পাতা তোলার কাজ করেন মূলত মহিলা শ্রমিকেরা। প্রথমে শ্রমিকদের কাছ থেকে মমতা শিখে নেন গাছ থেকে পাতা তোলার কায়দা। কিছু ক্ষণের মধ্যে নিজেই দিব্যি চা-পাতা তুলতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। পাতা তুলে রাখতে থাকেন মাথায় বাঁধা ঝুড়িতে।
পাতা তোলার পাশাপাশি, চলতে থাকে গল্পগুজবও। গল্পের ছলেই মুখ্যমন্ত্রী জেনে নেন শ্রমিকদের বাড়ির অবস্থা। চা বাগান কেমন চলছে তা জানার পাশাপাশি খুঁটিয়ে জেনে নেন তাঁদের আয়ের বিষয়টিও। তাঁরা যে জমিতে থাকেন তার পাট্টা রয়েছে কি না, চা শ্রমিকদের জনে জনে জিজ্ঞেস করে তা জেনে নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরের চা বাগানে চা-পাতা তোলার সময় একটি নির্দিষ্ট গান গেয়ে থাকেন শ্রমিকেরা। মমতা সেই গানটি শোনাতে বলেন তাঁদের। সঙ্গে সঙ্গে সমবেত ভাবে গান শুরু করেন শ্রমিকরা। এরই ফাঁকে নিজের লেখা কবিতাও শ্রমিকদের শোনান মমতা। অনেক ক্ষণ সময় চা শ্রমিকদের সঙ্গে কাটান মুখ্যমন্ত্রী।
চা-পাতা তোলা শিখে স্বভাবতই উৎফুল্ল মমতা বলেন, ‘‘আজ ওদের পোশাক পরে, ঝুড়ি নিয়ে আমি নিজে চা-পাতা তুললাম। চা-পাতা তোলাটা ওদের কাছ থেকে শিখলাম। এখন আমি যে কোনও চা বাগানে গিয়ে চা-পাতা তুলতে পারি। এটা আজ আমার বড় শিক্ষা হল। পাহাড়ের সঙ্গে আমাদের রক্তের বন্ধন হয়ে গেল, হৃদয়ের মেলবন্ধন রচিত হল। পাহাড় আমার নিজের বাড়ি হয়ে গেল। পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন তৈরি হল— সবাই একসঙ্গে আমরা কাজ করব। আমি কিন্তু মুখে বলি না। রক্তের সম্পর্ক তৈরি করে দেখাই। আই অ্যাম সো হ্যাপি! উই আর ওয়ান (আমি আজ খুবই খুশি। আমরা সবাই এক)।’’
ভাইপোর বিয়ে উপলক্ষে বুধবার কার্শিয়াঙে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আছেন একটি রিসর্টে। বৃহস্পতিবার কার্শিয়াঙের টাউন হলে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। তার ফাঁকেই পাঙ্খাবাড়ি রোডে এই চা বাগানে সময় কাটালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy