E-Paper

দুর্নীতির অভিযোগ, তবু পঞ্চায়েত দখলে তৃণমূলেরই

কেন্দ্রীয় দল পৌঁছেছিল কোচবিহার ১ ব্লকের ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানে অভিযোগ ছিল, আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ০৭:০৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

কোথাও অভিযোগ উঠেছিল একশো দিনের কাজে দুর্নীতির। কোথাও অভিযোগ ছিল আবাস যোজনা নিয়ে। তার মধ্যে একাধিক গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় দলও। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটি সন্দেহজনক বিষয় নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সে দলের সদস্যেরা। কোথাও প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েত কর্তাদের তিরস্কারও করা হয়েছিল। ভোটের ফল বেরোনোর পরে দেখা গিয়েছে, সে সব পঞ্চায়েতের সব ক’টিই দখল করে নিয়েছে তৃণমূল।

কেন্দ্রীয় দল পৌঁছেছিল কোচবিহার ১ ব্লকের ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানে অভিযোগ ছিল, আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে। ওই পঞ্চায়েতের ২৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। বাকি ১৪টিতে নির্বাচন হয়। তার সব ক’টি গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। কোচবিহার ২ ব্লকের মরিচবাড়ি-খোলটা ও গোপালপুরেও আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ওই তিনটি পঞ্চায়েতেই অভিযোগ ছিল, তৃণমূল নিজেদের মতো করে আবাস যোজনার তালিকা তৈরি করেছে। প্রকৃত দরিদ্রদের নাম তালিকায় নেই। বরং, তৃণমূলের নেতা-কর্মী যাঁরা আর্থিক ভাবে সচ্ছল, তাঁদের নাম রয়েছে তালিকায়। কেন্দ্রীয় দল গ্রাম ঘুরে অভিযোগের খুব কিছু সারবত্তা খুঁজে পায়নি।

কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের সদস্যেরা। মরিচবাড়ি-খোলটায় এক তৃণমূল নেতার পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁর নাম কেন আবাস তালিকায়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও সে নাম কেটে দেওয়া হয় বলে জানানো হয়। সেই মরিচবাড়ি-খোলটার ৩০টি আসনের মধ্যে ২৭টি দখল করেছে তৃণমূল, তিনটি বিজেপি। গোপালপুরে ২৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৫টি, বিজেপি আটটি এবং কংগ্রেস একটি আসনে জয়ী হয়। মাথাভাঙা ২ ব্লকের নিশিগঞ্জ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতেও আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যে বুথ ঘিরে অভিযোগ ছিল, সেই ১৭৮ নম্বর বুথে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন রিনা চহ্বান। ওই পঞ্চায়েতও দখল করে তৃণমূল।

একশো দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল কোচবিহারের দিনহাটায়। সে সব পঞ্চায়েতগুলিতেও গিয়েছিল কেন্দ্রীয় দল। ওই পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে রয়েছে দিনহাটা ১ ব্লকের পুঁটিমারি এক পঞ্চায়েত, দিনহাটা দুই ব্লকের গোবরাছড়া-নয়ারহাট, শুকারুরকুঠি এবং বড়শাকদল। ওই পঞ্চায়েতগুলিতে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ না করেই টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল।

সেই পুঁটিমারি এক পঞ্চায়েতে ২০টি আসনের মধ্যে ১৯টি পেয়েছে তৃণমূল। একটি পেয়েছে বিজেপি। গোবরাছড়া নয়ারহাট পঞ্চায়েতের ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২৯টি। একটি আসন নির্দলের। বড়শাকদল পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের মধ্যে বিজেপি দু’টি ও তৃণমূল পেয়েছে কুড়িটি আসন।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘‘এগুলো মানুষের রায় নয়। সব ছাপ্পা ভোট। মানুষ ভোটদানের সুযোগ পেলে, দুর্নীতিগ্রস্তদের ছুড়ে ফেলে দেবে।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, ‘‘দুর্নীতির কথা বলে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। গ্রামের মানুষের ঘরের টাকা, একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি সরকার। মানুষ তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।’’

তথ্য সহায়তা: সুমন মণ্ডল ও তাপস পাল

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Cooch Behar TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy