কোচবিহার মেডিক্যাল হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তথ্য চেয়ে পাঠাল রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশন। বর্তমানে রাজীব উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান। গত ২৩ এপ্রিল কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনের নর্থ বেঙ্গল জ়োনের তরফে ওই চিঠি গিয়েছে। তা নিয়ে নতুন করে শোরগোল পড়েছে।
করোনার আগে থেকেই রাজীব কোচবিহার মেডিক্যালের সুপার ছিলেন। গত বছরই তাঁর বদলি হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। কমিশনের পক্ষ থেকে কোচবিহার মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে রাজীবের সময়ের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে তথ্য তলব করা হয়েছে। যা নিয়ে রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘আমার কাছে এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানতে চাননি। কিছু লোক বদনাম করার জন্য এ সব করছেন তাতে লাভ হবে না।’’ তার পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘এর আগেও স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করে দেখেছে। কিছু মেলেনি। যে কোনও রকম তদন্ত হওয়া ভাল।’’ তবে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ভিজিলেন্স কমিশনের পক্ষ থেকে রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে যা জানতে চাওয়া হয়েছে আমরা সব তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অ্যাকাউন্টস অফিসার নুরুদ্দিন মল্লিক স্বাস্থ্য সচিবের কাছে একাধিক অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগে, হাসপাতালের বিছানাপত্রে চাদর-ঢাকনা পরিস্কার করার খরচ থেকে খাবারের মাত্রাতিরিক্ত বিল, নিয়ম না মেনে নিরাপত্তা কর্মীদের সময় সীমা বাড়নোর সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেন। সুপার থাকার সময় শিলিগুড়ির নকশালবাড়িতে নিয়মিত যাতায়াতে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ‘লগবুকে’ তা দেখাতেন না। নিজের নামে দুই জায়গায় সরকারি কোয়ার্টার বরাদ্দ রাখতেন। পিপিপি মডেলের এমআরআই, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, ডায়ালিসিসের খরচ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এ সব নিয়ে কেউ বলতে চাইলে কর্মী, আধিকারিকদের শোকজ়ের ভয় দেখানো হত বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও ইতিমধ্যে তদন্ত করা হচ্ছে। এবার রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশন তদন্তে নেমেছে। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বর্তমান সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার সৌরদীপ রায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)