ছোট্ট শিশুকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় বাপের বাড়ি যাচ্ছেন দিনহাটার গোপালনগরের বেনজির খাতুন। দিন কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে টিকিট কেটেছেন তিনি। কোচ নম্বর এস সিক্স। আসন নম্বর ৪৫। শুক্রবার দিনহাটা স্টেশনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ঠেলে ট্রেনে ওঠেন বেনজির। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ওই মহিলাকে নিজের আসন ছেড়ে উপরের বাঙ্কে উঠে যাওয়ার জন্য চাপ তৈরি করেন। ক্ষুব্ধ বেনজির বলেছেন, ‘‘আমার ছোট বাচ্চা রয়েছে। তার পরেও আমাকে বলা হয়, ‘উপরে উঠতেই হবে’। বিষয়টি আমি আরপিএফকে জানাব।’’ তৃণমূল নেতা বিশু ধর অবশ্য বলেন, ‘‘ওই অভিযোগ ঠিক নয়।’’
২১ জুলাইয়ের সভায় যোগ দিতে কোচবিহার থেকে শুক্রবারও রওনা হয়েছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। এ দিন কলকাতাগামী প্রায় সমস্ত ট্রেনেই উপচে পড়ছে ভিড়। শুধু ওই ঘটনা নয়, অভিযোগ রয়েছে, এ দিনও তৃণমুল কর্মীদের একটি অংশ টিকিট না কেটে সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়েন। অসংরক্ষিত কামরাতেও চাপাচাপি অবস্থা হয়। এর মধ্যেই আবার গুঞ্জন ছড়িয়েছে, কোচবিহার বিজেপির শীর্ষ এক নেতা কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের মঞ্চে থাকতে পারেন। যে সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। সব গুজব।’’
লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে বিজেপির ‘ওজনদার’ প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকে ৩৯ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে দেন তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। তার পর থেকে বিজেপিতে কার্যত ‘ধস’ নামে। কোচবিহারে বিজেপির দখলে ছিল ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত। লোকসভার ফল ঘোষণার পর থেকে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯টিতে। ১৫টি পঞ্চায়েত বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। ১৫০ জনের বেশি বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি শাসক দলের। উত্তরবঙ্গের আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে এই একটি মাত্র আসন, কোচবিহার তৃণমূল দখল করেছে। এই পরিস্থিতিতে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আলাদা উন্মাদনা রয়েছে এ বার।
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, আর এক রাজ্য সহ সভাপতি প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, দলের মুখপাত্র কোচবিহারের নেতা পার্থপ্রতিম রায় কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অন্য দল থেকে কে-কে যোগদান করতে পারেন, তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি আপাতত।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)