Advertisement
২২ মে ২০২৪

উজ্জ্বল খুনে নিষ্ক্রিয় পুলিশ, ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরেই

তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিয়োগ উঠেছে তৃণমূলেরই অন্দরে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল দাসকে সম্প্রতি একটি দলীয় অনুষ্ঠানেই প্রচণ্ড মারধর করা হয়। আহত উজ্জ্বলবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি। এরপরেই যারা উজ্জ্বলবাবুকে মারধর করেছে, তাদের ধরার দাবি উঠতে থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৪
Share: Save:

তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিয়োগ উঠেছে তৃণমূলেরই অন্দরে।

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল দাসকে সম্প্রতি একটি দলীয় অনুষ্ঠানেই প্রচণ্ড মারধর করা হয়। আহত উজ্জ্বলবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি। এরপরেই যারা উজ্জ্বলবাবুকে মারধর করেছে, তাদের ধরার দাবি উঠতে থাকে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, উজ্জ্বলবাবু খুনে অভিযুক্তেরা দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ওই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাদের দলের উচ্চপদও দেওয়া হয়। পদ পেয়েই তারা ফের কর্তৃত্ব কায়েম করতে তারা উঠেপড়ে লেগেছিল বলেও দাবি করেছেন বরাবরই তৃণমূলে থাকা নেতারা। তৃণমূলেই বরাবর রয়েছেন এমন নেতাদের সেই সঙ্গেই দাবি, সব জেনেও দল কোনও ব্যবস্থা না নিচ্ছে না। তাদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন দলের পুরনো নেতারা। পুরনো নেতাদের বক্তব্য, দলবদল করে আসা নেতারা কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টাতেই পেশিশক্তি ব্যবহার করছে।

জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে দল ব্যবস্থা নেবে।’’ চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদারও বলেন, ‘‘চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে চেষ্টা চলছে।’’

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গায়ক তথা তৃণমূল নেতা সৌমিত্র রায়ের উদ্যোগে সিঙ্গুর উত্সব পালনের মঞ্চে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাঁধে। সৌমিত্রবাবুর বন্ধু উজ্জ্বলবাবুকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার সন্ধ্যায় উজ্জ্বলবাবুর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান তজমুল হোসেনের ভাই সামিউদ্দিন রহমান ওরফে জম্বুবাবু সহ তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্তদের অধিকাংশই অধরা বলে অভিযোগ।

দলীয় সূত্রেই দাবি, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের দু’টি ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি বারিকুল ইসলাম ওরফে বুলবুল ও মকরম আলি ওরফে স্বপন। বাম আমলেও তাঁরা শাসকদলের ছত্রছায়ায় ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বছর খানেক আগে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ পদ পান।

বারিকুল ঘটনার পর দিন থানায় গিয়েছিলেন। তবু পুলিশ তাঁকে ধরেনি বলে অভিযোগ। আর মকরম মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকলেও পুলিশের উদাসীনতাতে সে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ওই দুই যুব নেতার বিরুদ্ধে কেন জেলা নেতৃত্ব এখনও নীরব, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। যদিও জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্লান ভাদুড়ির দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথা সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তজমুল অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘অভিযুক্তদের সাজা হোক, আমিও চাই। কিন্তু ভাই জম্বু প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও দলের জন্য খাটতেন, সেটাই অনেকের সহ্য হচ্ছিল না বলে দলের একাংশ ওকে ফাঁসিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder police TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE