Advertisement
E-Paper

কবে থেকে খাদ্য সুরক্ষা, দ্বিধায় রাজ্য

শুরুতেই ধাক্কা। কথা ছিল, পয়লা এপ্রিল থেকে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হবে রাজ্যে। তার ‘পাইলট’ শুরু হওয়ার কথা দক্ষিণ দিনাজপুরে থেকে। কিন্তু সব ব্লকে এখনও পৌঁছয়নি ডিজিটাল রেশন কার্ড। তাই খাদ্য মন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু করার দিন পিছিয়ে দিতে পারে জেলা প্রশাসন।

অনুপরতন মোহান্ত

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ০১:১৬

শুরুতেই ধাক্কা। কথা ছিল, পয়লা এপ্রিল থেকে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হবে রাজ্যে। তার ‘পাইলট’ শুরু হওয়ার কথা দক্ষিণ দিনাজপুরে থেকে। কিন্তু সব ব্লকে এখনও পৌঁছয়নি ডিজিটাল রেশন কার্ড। তাই খাদ্য মন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু করার দিন পিছিয়ে দিতে পারে জেলা প্রশাসন।

গত ১৪ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বালুরঘাটে প্রশাসনিক ও পঞ্চায়েত স্তরে বৈঠক করে পয়লা এপ্রিল থেকে এই জেলায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালুর কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “পয়লা এপ্রিল থেকে জেলায় খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হবে কি না এখনই ঠিক করে বলা যাবে না। তবে ১ বৈশাখ (১৫ এপ্রিল) থেকে জেলায় ওই আইন চালু করা যাবে।”

কেন এমন দেরি? জেলাশাসক জানান, কুশমন্ডি ব্লকে ডিজিটাল কার্ড বিলি শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি সাতটি ব্লকে কার্ড বিলি হবে। তাতেই আরও সময় লেগে যাবে। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধু কুশমন্ডি ব্লকের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ ২০ হাজার ডিজিটাল কার্ডের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত মাত্র ৩০ হাজার কার্ড বিলি করা সম্ভব হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বাকি সাতটি ব্লকের উপভোক্তাদের জন্য এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এ জেলার মোট ১০ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬২৯ জন বাসিন্দা খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় এসেছেন। অর্থাৎ সমপরিমাণ ডিজিটাল রেশন কার্ড দরকার। ওই পরিমাণ কার্ড কলকাতা থেকে ছাপা হয়ে না আসায় সমস্যা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় সে কথা স্বীকার করে বলেন, “সমস্ত কার্ড আসেনি। এপ্রিলের মধ্যে জেলা জুড়ে প্রকল্পটি চালুর প্রক্রিয়া চলছে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত রেশন দোকানগুলিতে ডিজিটাল রেশন কার্ড নথিভুক্ত করার জন্য কম্পিউটার-চালিত মেশিন বসানো হয়নি। ফলে, ডিজিটাল কার্ডে হাতে লেখা হচ্ছে সব তথ্য। তাতে কারচুপির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অথচ বিকল্প কোনও রাস্তা নেই খাদ্য দফতরের। তাই ডিজিটাল কার্ডের মাধ্যমে গণবন্টন ব্যবস্থায় অনিয়ম আটকানোর যে উপায়ের কথা খাদ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তা কবে কার্যকর হবে সেই প্রশ্নে সংশয় রয়েছে দফতরেই।

প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়ে গিয়েছে অন্য দিকেও। বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস ডিলার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি মিহিরকুমার দাস জানান, নতুন ব্যবস্থায় অনিয়ম রোধে উপভোক্তার ডিজিটাল কার্ড রেশন দোকানে বসানো সোয়াইপ মেশিনে পাঞ্চ করে তাঁর প্রাপ্ত খাদ্যশস্যের নথি রেকর্ড হবে। তাতে কোন গ্রাহক কতবার কত পরিমাণ চাল গম পেলেন তার হিসাব জেলা থেকে রাজ্য খাদ্য দফতরে নথিভুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু এ জেলার প্রায় ৩০০ রেশন দোকানের ডিলারকে সরকারিভাবে সফট্ওয়্যার সরবরাহের কথা থাকলেও, এখনও তা হয়নি। কম্পিউটার কেনার জন্য সহায়তা দিতে প্রতি রেশন ডিলারকে কুইন্টাল পিছু খাদ্যশস্যের কমিশন ১৭ টাকা বেশি দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা কবে কার্যকর হবে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। “এমনকী, ডিলারদের ডিজিটাল কার্ড ব্যবহারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও এখনও হয়নি,” বলেন তিনি।

প্রস্তুতিপর্ব সম্পূর্ণ না করেই তড়িঘড়ি এত বড় মাপের প্রকল্পের কাজ চালু করে দেওয়া হচ্ছে কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের অন্দরেই। সরাসরি তার উত্তর এড়িয়ে টেলিফোনে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডি ব্লক দিয়েই খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হচ্ছে। প্রতিটি ব্লকের গ্রাম সংসদ স্তরে ডিজিটাল কার্ড পৌঁছে দিয়ে পর্যায়ক্রমে প্রকল্প চালু করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারা বাংলায় ডিজিটাল কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হয়ে যাবে।”

Trinamool Election municipal election Coochbehar BJP CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy