সম্পর্কে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। নাম শুভজিৎ বল্লভ এবং রিয়া হালদার বল্লভ। ২০২৪ সালে ৮৭৭টি সাইবার অপরাধের মামলা হয়েছে দম্পতির বিরুদ্ধে। ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানায় ৬৮টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ওই দম্পতির নামে। কেবল কোচবিহার জেলাতেই ১৯টি মামলা। এ হেন দম্পতিকে যৌথ অভিযানে পাকড়াও করল কোচবিহারের তুফানগঞ্জ এবং সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএসএফের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন ওই দম্পতি। কী ভাবে অপরাধের জাল বিছিয়েছিলেন? জানা যাচ্ছে, কোনও বিএসএফ শিবির সংলগ্ন ব্যাঙ্কে সিএসপি-তে (কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট) নিজেদের বিএসএফের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ফোন করতেন বল্লভদম্পতি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করা হত। আশ্বস্ত করা হত কিছু ক্ষণ বাদেই কমিশন-সহ সিএসপি-তে গিয়ে টাকা দিয়ে আসবেন। কিন্তু পরে ব্যাঙ্ক থেকে খোঁজ নিয়ে দেখা যেত বিএসএফ ক্যাম্পে এমন কোনও আধিকারিক নেই। মঙ্গলবার কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ এবং তুফানগঞ্জ থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত সোমবার বিহারের দারভাঙা এলাকায় একটি হোটেল থেকে স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দ্যুতিমান জানান, দু’জন ধানতলা রানাঘাট এলাকার বাসিন্দা। শুভজিতের ফোন নম্বর ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডে পোর্টালে দিয়ে দেখা যায় ২০২৪ সালে ওই নম্বরটি উল্লেখ করে ৮৭৭টি এফআইআর রয়েছে। ২০২৫ সালে ৬৮টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে কোচবিহারেই ১৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। আর ২০২৫ সালের ৬৮টি মামলায় ৪৮ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে দম্পতির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন:
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থানার পুলিশ একবার গ্রেফতার করেছিল বল্লভদম্পতিকে। জামিন নিয়ে বেরিয়ে আবার অপরাধের কাজে নামেন স্বামী-স্ত্রী। কিছু দিন তাঁরা উত্তরপ্রদেশে একটি সিআরপিএফ শিবিরের কাছে ছিলেন। পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে ১৮৩টি, রাজস্থানে ১০৭টি, তেলেঙ্গনায় ৭৭টি, মহারাষ্ট্রে ৬০টি, দিল্লিতে ৫৫টি, বিহারে ৫৪টি, তামিলনাড়ুতে ৪৯ টি এবং পশ্চিমবঙ্গে ৪৩টি মামলা রয়েছে দু’জনের নামে। এ ছাড়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যুগলের বিরুদ্ধে ২৫৮ টি মামলা দায়ের হয়।