Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
আজ থেকে ‘লকডাউন’, মিলবে শুধু জরুরি পরিষেবা
Coronavirus

জনতা কার্ফুর দিনে নতুন উদ্বেগ: আজ থেকে কী হবে

তবে রাজ্য সরকারি নির্দেশ আসতেই লকডাউনের প্রস্তুতি এ দিন বিকেল থেকেই শুরু করল জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা প্রশাসন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৬:২৭
Share: Save:

আতঙ্ক আর উদ্বেগ তো কয়েকদিন ধরে ছিলই। তবু রবিবার সকাল থেকে জনতা কার্ফুর জেরে বাজারহাট বা ছেলের টিউশনি বা টুকটাক কেনাকাটার ব্যাপার থেকেই ছুটি ছিল। দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরে লোকজন ঘরে একটু জিরিয়েই নিচ্ছিলেন। আচমকা বিকেলে এল উদ্বেগের নতুন ধাক্কা। খবরে এল, সোমবার থেকেই রাজ্য জুড়ে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। শুনেই মাথায় হাত ছা-পোষা মানুষের। গোটা রাজ্যের মতো উত্তরের তিন জেলাতেও সকলের মুখে একটাই প্রশ্ন, কী হবে সোমবার থেকে? বাজার খোলা থাকবে তো? গাড়ি চলবে কি?

তবে রাজ্য সরকারি নির্দেশ আসতেই লকডাউনের প্রস্তুতি এ দিন বিকেল থেকেই শুরু করল জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন এ দিন। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার খালা থাকবে। দিনবাজার, স্টেশন বাজারের মতো বাজারগুলি খোলা থাকবে। তবে বাজারের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। কবে কোন বাজার খোলা থাকবে তারও তালিকা হতে পারে। আজ, সোমবার ফের বৈঠকে বসছে প্রশাসন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে। এখানে শুধু জেলা সদরেই, অর্থাৎ জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকাতেই লকডাউন ঘোষিত হয়েছে। তবে সকলকেই অকারণ উত্তেজনা না ছড়াতে আর্জি জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “আগামিকালের মধ্যে সকলের কাছে নির্দেশিকা পৌঁছে দেওয়া হবে। কী কী খোলা থাকবে আর কী কী বন্ধ থাকবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার খোলা রাখার কথাই ভাবা হয়েছে। না হলে আতঙ্ক বাড়বে। তবে বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ চালু করা হবে।”

কোচবিহারে ছ’টি পুরসভা রয়েছে। কোচবিহার পুরসভা ছাড়াও দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি পুরসভা। সবক’টি পুরসভাতেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্তিতিতে যাতে কাউকে কোনও অসুবিধেয় পড়তে না হয় সেদিকে নজর রাখবে পুলিশ-প্রশাসন এবং পুরসভার কর্মীরা।

কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।” জেলা পুলিশ সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “আইন মেনে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ জানান, সোমবার সকাল থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভার কর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। পুর চেয়ারম্যান নিজেও ওয়ার্ডে ঘুরবেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধপত্র নিয়ে যাতে সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা না হয় নজর থাকবে সেদিকে। পুরসভার চেয়ারম্যান সমবায়িকার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, “সমবায়িকায় যাতে সমস্ত পণ্য মজুত থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চাহিদা মতো স্যানিটাইজ়ারও দেওয়া হবে। কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “কোনওরকম কালোবাজারি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে ছাড় রয়েছে।”

আজ আলিপুরদুয়ার শহর ও ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জেলার জয়গাঁয় লকডাউন হতে চলেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশিকা পালন করতে জেলার প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি নির্দেশ নিয়ে প্রশাসনের তরফে মাইকিং করা হয়। আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আলিপুরদুয়ার শহর ও জয়গাঁয় কাঁচা বাজার খোলা থাকবে। মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিস সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।’’ জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক জায়গায় যাতে বেশি মানুষের ভিড় না হয় সেদিকে পুলিশ নজর রাখবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CoronaVirus Janta Curfew
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE