Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Kishanganj

করোনা রুখতে নজর ‘নেই’ স্টেশনে

স্টেশন দু’টির উপর দিয়ে সারাদিনে প্রায় একশোটি যাত্রিবাহী ট্রেন যাতায়াত করে। সপ্তাহে তিন দিন চলে সুপার এক্সপ্রেসও।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
কিসানগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ০১:৪০
Share: Save:

বিহারের বারসই ও কিসানগঞ্জ—উত্তরপূর্ব-ভারত তো বটেই, কলকাতা, দিল্লি ও দক্ষিণ ভারতে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও এই দু’টি স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এই দুই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন হাজার হাজার যাত্রী। কিন্তু দেশজোড়া করোনা-সতর্কতার মধ্যেও এই দুই স্টেশনে নেওয়া হচ্ছে না কোনও সাবধানতাই। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, আর সব বাদ দিলেও, সামান্য স্ক্রিনিং টেস্টের ব্যবস্থাটুকুও করা হয়নি। সব মিলিয়ে রেলের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ভুগছেন করোনা-আতঙ্কে।

স্টেশন দু’টির উপর দিয়ে সারাদিনে প্রায় একশোটি যাত্রিবাহী ট্রেন যাতায়াত করে। সপ্তাহে তিন দিন চলে সুপার এক্সপ্রেসও। এই রুট দিয়ে যায় কলকাতা-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস, দিল্লি-গোয়াহাটি রাজধানী, নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারতগামী বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি। আর এই দুই স্টেশনে বেশিরভাগ ট্রেনের স্টপেজও রয়েছে। বাসিন্দারা জানালেন, জেলা প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেছে, বন্ধ করা হয়েছে কিসানগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খাগড়া মেলাও। এমনিতেই সামনে নেপাল সীমানা। সেটা সিল করার পাশাপাশি যাতায়াতের ক্ষেত্রেও রাশ টানা হয়েছে। দিঘলব্যাঙ্ক ও গলগলিয়া চেকপোস্টে স্ক্যানার দিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই হেলদোল নেই রেল কর্তৃপক্ষের, এখনও স্ক্রিনিং টেস্টের ব্যবস্থাই করা হল না—নালিশ বাসিন্দাদের।

বারসইয়ের বাসিন্দা প্রকাশ সাহা বলেন, ‘‘দূরদূরান্তের প্রচুর যাত্রী প্রতিদিন এই স্টেশন ব্যবহার করেন। অথচ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। করোনাভাইরাস রুখতে এ রকম একটা ব্যস্ত স্টেশনে কোনও বন্দোবস্তই হয়নি।’’ স্টেশনের পাশেই ওষুধ বিক্রি করেন হরেন কুমার, চিন্তিত তিনিও। বললেন, ‘‘কোনও পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা তো আছেই। আর সেই আতঙ্কে দোকানের দুই কর্মীও ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। আমিও দোকান সামলাচ্ছি, ব্যবসা তো বন্ধ করতে পারি না। কিন্তু কী হবে জানি না।’’

কিসানগঞ্জ স্টেশনেও ছবিটা কম-বেশি একই। এই স্টেশন থেকে প্রতিদিনই ভিন্‌রাজ্যে কাজ করতে যান এলাকার বহু শ্রমিক, অনেকে প্রতিদিন যাতায়াতও করেন। কিন্তু সেখানেও প্রশ্নের মুখে রেলকর্তৃপক্ষ।

করোনা আতঙ্কের জের পড়ছে ব্যবসাতেও। এক রেলকর্মী জানালেন, আগের চেয়ে ভিড় কমেছে অনেকটাই। স্থানীয় ব্যবসায়ী রঞ্জন আগরওয়ালের কথায়, ‘‘এখনই ৪০ শতাংশ ব্যবসা কমে গিয়েছে। কবে সব ঠিক হবে জানি না।’’

কিসানগঞ্জের জেলাশাসক আদিত্য প্রকাশ জানান, কিসানগঞ্জ স্টেশনে স্ক্রিনিং বসানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। রেলকেও জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই স্টেশনে স্ক্রিনিং পয়েন্টের ব্যবস্থা করা হবে।’’ আর উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘প্রত্যেক যাত্রীকে স্ক্রিনিং করার নির্দেশিকা এখনও নেই। তবে রেল সতর্ক রয়েছে। সন্দেহজনক রোগী পাওয়া গেলে দ্রুত পরিষেবা দিতে চিকিৎসকরাও তৈরি আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kishanganj Barsoi Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE