প্রতীকী ছবি।
সময়ের কাজ সময় মতো শেষ করে বড় বিপদ এড়াল কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দিন তিনেক আগেই এই হাসপাতাল চত্বরে বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরির নিজস্ব প্ল্যান্ট চালু হয়ে উৎপাদন শুরু হয়েছে। শুক্রবার বাইরে থেকে অক্সিজেনের জোগানে আচমকা সঙ্কট তৈরি হওয়ায় নিজেদের সদ্য তৈরি প্ল্যান্টের অক্সিজেন দিয়েই বড় বিপদ থেকে বাঁচানো গেল এই হাসপাতাল অনেক রোগীকে।
মেডিক্যাল সূত্রের খবর, দু’দিন আগে বাইরের অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থা সরবরাহে সমস্যার কথা জানিয়ে দেয়। শুক্রবার দেখা যায়, কোভিড রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনের সিলিন্ডার নেই। শেষে ওই প্রকল্প থেকে অক্সিজেন মেলায় চাহিদা মেটাতে সমস্যা হয়নি। এই ঘটনা দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং অন্য সরকারি হাসপাতালেও দ্রুত এই প্রকল্প তৈরির দাবি উঠেছে।
সরবরাহকারী সংস্থা এবং প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থা জানিয়েছিল কাঁচামাল ‘লিকুইড অক্সিজেন’-এর অভাবে অক্সিজেন জোগান দিতে পারবে না। ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনও উদ্যোগী হয়। এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে ২৫টি সিলিন্ডার মাত্র মজুত ছিল হাসপাতালে। অথচ, কোভিড ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিতে দরকার ৩২-৩৫টির মতো। হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬০-৬২ জন করোনা রোগী ভর্তি আছেন। ২৪টি সিসিইউ শয্যা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুশকিল আসান হয়ে ওঠে নিজেদের প্ল্যান্টই। বাতাস থেকে সংগ্রহ করা অক্সিজেন প্ল্যান্টে প্রক্রিয়াকরণের পর পাইপলাইনের মাধ্যমে রোগীদের সরবরাহের ব্যবস্থা আগেই চালু করা হয়েছিল। ফলে আর সমস্যায় পড়তে হয়নি কর্তৃপক্ষকে। প্ল্যান্টের অক্সিজেন মজুতের ট্যাঙ্ক স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বাতাসের অক্সিজেন প্রক্রিয়াকরণের পর ভরে যায়। তাই জোগানে সঙ্কটও হচ্ছে না।
নভেম্বর মাস থেকে কোচবিহার মেডিক্যালে কাজ শুরু হয়েছিল। সম্প্রতি ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। কয়েকদিন ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করা হলেও গত বুধবার থেকেই রোগীর শয্যায় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা চালু হয়ে যায়। ফলে আচমকা বাইরের জোগান সঙ্কটেও নিশ্চিত হয়ে হাসপাতাল চালাতে পেরেছেন কোচবিহার মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
কোচবিহারে মেডিক্যালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘রোগীদের জন্য বিশেষ করে কোভিড রোগীদের জন্য অক্সিজেনের সমস্যা আমরা হতে দিইনি। প্ল্যান্ট করে বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি রেখেছি। শুক্রবার জরুরি প্রয়োজনে সেটাই কাজে দিয়েছে কোনও সমস্যা হয়নি।’’ শনিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কিছু সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগাম সতর্কতায় হিসেবেই সমস্ত পদক্ষেপ হচ্ছে। ফাঁক রাখা হচ্ছে না। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক রাকিবুর রহমান বলেন, “অক্সিজেন নিয়ে এখনও কোনও সমস্যা নেই। বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে।”
কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রণজিৎ ঘোষ জানান, মেডিক্যাল কলেজের পিএসএ চালু হয়েছে। তুফানগঞ্জ ও দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালেও একই প্রকল্প গড়ার প্রক্রিয়াও চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy