সুশিক্তা, তমালী, পাপিয়া, পূজা, সঙ্ঘমিত্রা— ওঁরা পাঁচ জন জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের সরকারি স্বাস্থ্য কর্মী নন। হাসপাতালে পিপিই মডেলে গড়ে ওঠা সিটি স্ক্যান কেন্দ্রের বেসরকারি স্বাস্থ্য কর্মী এই পাঁচ মহিলা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্তদের বুকের সিটি স্ক্যান করে চলেছেন। সকাল আটটা থেকে রাত প্রায় ন’টা পর্যন্ত এই কাজ করছেন ওঁরা।
জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পিপিই মডেলে সিটি স্ক্যান কেন্দ্রে এখন প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত এবং করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের ভিড় বাড়ছে। গড়ে ৫০ জনের এই স্ক্যান করা হচ্ছে বলে দফতর সূত্রের খবর। শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের রোগীদের নয়, জেলার মালবাজার, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, রাজগঞ্জ থেকেও সিটি স্ক্যান করাতে আসছেন অনেকেই। এ ছাড়াও বেসরকারি চিকিৎসকদের পরামর্শেও এই কেন্দ্রে সরকার নির্ধারিত মাত্র ৮৫০ টাকার বিনিময়ে এই স্ক্যান করানো হচ্ছে।
সুশিক্তা সাহা বলেন, ‘‘আমার স্বামীও স্বাস্থ্য কর্মী। স্বভাবতই আমরা দু’জনেই করোনা মোকাবিলায় আমাদের দায়িত্ব পালন করে চলছি। বাড়িতে ন’বছরের শিশুকে রেখেই আমরা কাজ করতে আসছি। সব সময়ই আতঙ্কে থাকি আমারা। যতটা সম্ভব আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই কাজ করছি।’’ এই কেন্দ্রের কর্মী তমালী সরকারের কথায়, ‘‘বাড়িতে বয়স্ক বাবা ও মা আছেন। তাঁদেরকে ফেলে রেখেই কাজ করছি।’’ পাপিয়া বিশ্বাস ঘোষ, পূজা মিত্র এবং সঙ্ঘমিত্রা রাউতকেও একই ভাবে পরিবারের সদস্যদের ফেলে রেখেই কাজ করতে হচ্ছে।
পাপিয়া বলেন, ‘‘যে কোনও মুহূর্তে আমারা সংক্রামিত হতে পারি। তবুও মানুষের জীবন বাঁচাতে আমরা বদ্ধপরিকর। ভয় পেলে চলবে না আমাদের।’’ করোনা এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক চিকিৎসক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘আমরা এই স্বাস্থ্য কর্মীদের কুর্নিশ জানাই। ওঁরা সকলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মোকাবিলায় কাজ করছেন। কর্তব্যরত সকল স্বাস্থ্য কর্মীদেরই আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়েই পরিষেবা দিতে নির্দেশ দিয়েছি।’’