Advertisement
E-Paper

পরিবারকে কলের হাতল খুলে ‘শিক্ষা’

সূত্রের খবর, নিউ টাউন বাজারের কাছে ওই বাড়িটির মোট সদস্য পাঁচজন। এছাড়াও দু’টি পরিবার ওই বাড়িতে ভাড়া থাকে।

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২১ ০৬:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পড়শিদের থেকে চূড়ান্ত অমানবিক ব্যবহার পেলেন এক করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে থাকা কয়েকটি পরিবার।

করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বাড়ির ভাড়াটে বৃদ্ধা। বাড়ির অন্যরা বাইরে বের হলে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল পড়শিদের। তাই ওই বাড়ির ঠিক বাইরে থাকা পুরসভার কলের হাতল খুলে দিলেন তাঁরা। বাড়িতে থাকা বাকি সদস্যদের পানীয় জলের সংস্থানও তাতে বন্ধ হল। নিউ টাউন বাজারের কাছে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আলিপুরদুয়ার শহরে। ঘটনার পর থেকে জলকষ্টে ভুগতে শুরু করেন ওই বাড়ির তিনটি পরিবার। খবর পেয়ে, বৃহস্পতিবার বিকালে ওই বাড়িতে জলের জার নিয়ে ছুটে যান পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মিহির দত্ত। রাতের মধ্যে টিউবওয়েলের হাতল লাগানো না হলে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এলাকায় হুঁশিয়ারি দিয়ে আসেন তিনি।

সূত্রের খবর, নিউ টাউন বাজারের কাছে ওই বাড়িটির মোট সদস্য পাঁচজন। এছাড়াও দু’টি পরিবার ওই বাড়িতে ভাড়া থাকে। যার মধ্যে একটি পরিবারে ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধা, তাঁর পুত্রবধূ ও এগারো মাসের নাতনি রয়েছে। বৃদ্ধার ছেলে পরিযায়ী শ্রমিক। কেরলে কাজ করেন। ওই বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বৃদ্ধা। বুধবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষায় তাঁর করোনা ধরা পড়ে। ওই বাড়ির এক সদস্যের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে থাকা আমরা বাকিরা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করাতে যাই। ফিরে এসে দেখি বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারে থাকা ডিপ টিউবওয়েলের হাতল-সহ উপরের গোটা অংশটাই কেউ বা কারা খুলে তাতে একটি বস্তা পেঁচিয়ে রেখেছেন।”

ওই বাড়ির সদস্যরা জানায়িছেন, বাড়ির বাইরে থাকা ওই টিউবওয়েল থেকেই তাঁরা প্রত্যেকে খাওয়ার জল সংগ্রহ করেন। কিন্তু কলের হাতল খোলা থাকায় তা বন্ধ হয়ে যায়। ওই বাড়ির কাছেই বাড়ি বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ শুভেন্দু রায়ের। তিনি এবং এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ বলেন, “ওই ডিপ টিউবওয়েল থেকে পাড়ার আরও অনেকে জল নেন। নিউ টাউন বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশও ওই কলের উপর নির্ভরশীল। তাই আপাতত আক্রান্তের বাড়ির লোকেদের কলটি ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছিল। প্রয়োজনে পড়শিরাই তাঁদের বাড়িতে জল পৌঁছে দেবেন, তাও তাঁদের বলা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা কলটি ব্যবহার করতে থাকেন। তাই এলাকার কেউ হয়তো কলের হাতল খুলে নিয়েছেন।’’

তবে জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “জলের কল থেকে করোনা ছড়ায় না। এটা অমানবিক।” এ দিন বিকেলে জল নিয়ে ওই বাড়িতে যান পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মিহির দত্ত। টিউবয়েল হাতল-খোলা অবস্থায় দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে এগারো মাসের শিশু রয়েছে। তার কথা কেউ ভাবলেন না। বাড়ির সকলের সঙ্গে তাকেও জলকষ্টে রেখে দেওয়া মানা যায় না। রাতের মধ্যে কলের হাতল লাগানো না হলে, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy